শঙ্খনদীর তীরে ১৪ বছর ধরে পড়ে আছে অচল ২ ফেরী
শুকানো কয় গবাদিপশুর খড় ও গোবর
নিজস্ব প্রতিবেদক : দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলায় যাতায়াতের জন্য আজ থেকে সাড়ে ১৪ বছর আগেও অন্যতম মাধ্যম ছিল ফেরী।
তবে প্রায় সাড়ে ১৪ বছর আগে আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ সেতু নির্মিত হওয়ার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় ফেরী চলাচল।
ফেরী চলাচল বন্ধ হলেও শঙ্খ নদীর তৈলারদ্বীপ-চানপুর নৌরুটে চলাচলকারী ফেরী দুইটি এখনো সেখানেই পড়ে আছে।
দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর ধরে অযত্ন অবহেলায় অচল হয়ে যাচ্ছে। সংরক্ষণের অভাবে মরিচা পড়ে ক্ষয় হচ্ছে শঙ্খনদীর পাড়ে পড়ে থাকা এইসব ফেরীগুলোর বিভিন্ন অংশ।
এ ছাড়া রাতের আধাঁরে চুরি হচ্ছে ফেরীর মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চুরি থেকে রেহাই পাচ্ছে না ফেরীর নাটবল্টুগুলোও। এরপরও ফেরীগুলো অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। “সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল” যেন এ প্রবাদ বাক্যটাই এক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুইটি ফেরীর মধ্যে ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে একটি ফেরী। বাকি যে একটি ফেরী আছে তা যেন থেকেও নেই।
ফেরীর এক অংশ প্রায় পানির নিচে ডুবে আছে, বাকি অংশ গবাদিপশুর, খড়, গাদা ও গোবর শুকাতে দিয়েছে স্থানীয়রা।
এ ছাড়া শঙ্খনদীর পাড়ের অনেকটা জায়গা দখল করে আছে নষ্ট ফেরীগুলো। যার কারণে আনোয়ারায় তৈলারদ্বীপ ফেরীঘাট এলাকায় বেঁড়িবাঁধ নির্মাণের কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এইসব ফেরী।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আশির দশকের দিকে আনোয়ারা-বাঁশখালীর মানুষের কষ্ট লাঘব করতে তৈলারদ্বীপ-চাঁনপুর নৌরুটে ফেরী চালু হয়। এই পথে চলাচলে মানুষের নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়।
মানুষের এই ভোগান্তি থেকে উত্তরণে ২০০১ সালে ফেরীঘাট সংলগ্ন একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেন সরকার এবং ওই বছর ১৭ জানুয়ারি সেতুর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর ২০০৬ সালের ২৯ আগস্ট সেতুটি যানচলাচলের জন্য খুলে দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। এরপর থেকে টিউলিটি টাইপ-২ নামের কোটি টাকা মূল্যের উন্নতমানের এই ফেরী দুইটি পরিত্যক্ত অবস্থায় সেখানেই পড়ে আছে।
৬ নং বারখাইন ইউপি চেয়ারম্যান হাসনাইন জলিল শাকিল বলেন, ফেরী দুইটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই ফেরীগুলো দিয়ে প্রতিবছর রাজস্ব আদায় করতো সরকার।
কিন্তু বর্তমানের কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তৈলারদ্বীপ ফেরী দুইটি বিলীন হতে বসেছে। ফেরী দুইটির কারণে ওই এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
ফেরীগুলোর বিষয়ে সওজের ফেরী বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে খুব শিগগিরিই এই ফেরীগুলো অপসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান সড়ক ও জনপদ বিভাগ (দোহাজারী)এর প্রকৌশলী সুমন সিংহ।
আরএস/এমআই