chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

যানজটে নাকাল চট্টগ্রাম নগরী

পবিত্র রমজানের শুরুতেই তীব্র যানজটে নাকাল হচ্ছেন চট্টগ্রাম নগরবাসী। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও বেশির ভাগ সড়কে সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তীব্র যানজটে হিমসিম খাচ্ছেন মানুষ।

আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল থেকেই প্রায় প্রতিটি প্রধান থেকে অলিগলির সড়কেও তীব্র যানজট। কোন কোন সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যেন নড়ার সুযোগও ছিলোনা। ফলে গন্তব্যে যেতে মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

নগরীর দুই নম্বর গেইট, জিইসি, দেওয়ান হাট, আগ্রাবাদ, সল্টগোলা ক্রসিং, ইপিজেড, নিউ মার্কেট, নতুন ব্রিজ এলাকাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে যানজটে শত শত গাড়ি আটকে পড়তে দেখা যায় । এছাড়াও নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারেও শত শত গাড়ি যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেছে। বিশেষ করে নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং বন্দর এলাকায় যানজট থাকে সবচেয়ে বেশি।

প্রতিনিয়ত বাড়ছে গাড়ির সংখ্যা। আথচ রাস্তাগুলো প্রয়োজনের তুলনায় আনেক সরু। তা ছাড়া রাস্তা ও ফুটপাতে জায়গা না রেখে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে দোকানপাট। ফলে রাস্তায় চলাচলের জায়গার আভাবে বেড়ে উঠছে যানজট। এ ছাড়া গাড়ী চালক দের অজ্ঞতা, রিকশার আধিক্য, নেই কোন ট্রাফিক আইন মেনে চলা। নগরীর ব্যাস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতেও নেই কোন ট্রাফিক লাইটস, জেব্রা ক্রসিং। তার সাথে রয়েছে ওভারব্রিজ ব্যাবহার না করে নিয়ম না মেনে রাস্তা পারাপার। ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট গড়ে উঠার ফলে রাস্তার পাশে নেই কোন পর্যাপ্ত পরিমাণ পার্কিং ব্যাবস্তা। ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শহরে প্রতিনিয়ত যানজট সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

যানজটে নাকাল চট্টগ্রাম নগরী

যানজট এর কারণে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীগুলো সময়মতো নির্দিষ্ট স্থানে পৌছাতে পারে না। ফলে অসুস্থ ও বিপদাপন্ন অনেক মানুষের জীবন নেমে আসে মারাত্মক বিপর্যায়ে। যানজটের ফলে রাস্তায় ঘণ্টার পড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, হার জন্য কর্মস্থানে সঠিক সময় পৌছানো যায় না। অপরিকল্পিতভাবে ওয়াসা, ডেসা, গ্যাস, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ ও বেসরকারি সংস্থা বিজ্ঞাপন বিলবোর্ডসহ নানা কারণে প্রায়ই জনবহুল রাস্তাসহ আবাসিক রাস্তাতেও খোঁড়াখুঁড়ি করে। খোঁড়াখুঁড়ির পর পুনরায় রাস্তা মেরামত হয় না সময়মতো।

আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে জটে আটকে থাকা ব্যাক্তি গাড়ির মালিক রাফি ইসলাম, যানজট এড়ানোর জন্য ফ্লাইওভারে উঠেছি। কিন্তু এখানেও আটকে আছি আধা ঘণ্টা ধরে। একই ধরনের কথা বলেন ফ্লাইওভারে আটকে পড়া পিকআপ চালক মনির হোসেন। মনির বলেন, গতকাল ইফতারের সময়ও যানজটের কারণে রাস্তায় ইফতার করতে হয়েছে। আজকে সকাল থেকেও নগরীর প্রায় সব মোড়ে যানজট লেগে আছে।

মামুনুর রশিদ নামের এক অফিসগামী যাত্রী বলেন, বাসা থেকে অফিস ২০ মিনিটের দূরত্ব। কিন্তু এক ঘণ্টা আগে বের হয়েও অফিস যেতে পারছি না। একদিকে তীব্র রোদের গরম আর অপরদিকে যানজট। রোজা রেখেও আমাদেরকে এই দুর্ভোগ মেনে চলতে হচ্ছে।

নগরীর দেওয়ানহাট থেকে কাটগড় যাচ্ছিলেন মো তারেকুল ইসলাম। তিনি ভিক্টর মেট্রো প্রভাতি পরিবহণে উঠেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দেওয়ানহাট থেকে কাটগড়ে অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতে হয়। সারাদিন ক্লান্তিকর অফিস করে বাসায় যাওয়ার সময় প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হয়, যাওয়ার পথেও একই অবস্থা। তীব্র যানজটে নাকাল হয়ে ফিরতে হয় বাসায়।’

যানজট মোকাবিলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল করার জন্য বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। কিন্তু এতেও সমস্যার তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না।

 

মোহভ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর