chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগের মধ্যেই এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের’ অভিযোগ তুলেছেন এক নারী শিক্ষার্থী। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন সাংবাদিকতা বিভাগের ওই শিক্ষার্থী।

অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ২০২২ সালে কোর্স শিক্ষক থাকায় নাদির জুনাইদ বিভাগের শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের টপিক নির্ধারণ করে তা অনুমোদনের জন্য সরাসরি ফোন দিতে বলতেন। ভুক্তভোগীর টপিক চারবার বাতিল করে ব্যস্ততার কথা জানিয়ে রাতে ফোন দিতে বলতেন। রাতে ফোন দিলে ওই ভুক্তভোগীর সাথে তিনি টপিকের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতেন।

কোর্স শেষ হওয়ার পরে নাদির জুনাইদ ভুক্তভোগীর সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত হন। তাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন বলে অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।

তার অভিযোগ বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করলে শিক্ষক নাদির বলেন, ‘আমাদের মধ্যে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে পারে। আচ্ছা ভাবতে তো দোষের কিছু নাই। আমরা না হয় ভাবলাম! ধরে নাও না আমাদের বিয়ে হলে কেমন হবে? ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেমন হবে?’

অভিযোগ পত্রে ওই শিক্ষার্থী লেখেন তার শিক্ষক নাদির বলতেন, ‘ধরে নাও তোমার সাথে বিয়ে হলে, তোমার সাথে এটা করলে ওটা করলে কেমন হতো। মনে কর, আমরা সি-বিচ গিয়ে সান- বাথ…। এছাড়াও বিভিন্ন ডাবল মিনিং কথাবার্তা বলতেন এবং সারাক্ষণ যৌ প্ররোচনামূলক কথা বলার চেষ্টা করতেন।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগ তুলে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একটি ব্যাচের ২৮ শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ করেন, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরীক্ষার ফল খারাপ করিয়ে দিয়েছেন এই শিক্ষক।

এদিকে বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ তার শরীরের ‘স্পর্শকাতর’ অংশ নিয়ে প্রশ্ন করতেন নাদির জুনাইদ। বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও নাদির পুনরাবৃত্তি করে জিজ্ঞেস করতে ওই শিক্ষার্থীর কেন কোনো অনুভূতি নেই? শারীরিক কোনো চাহিদা কেন নাই? তার ইচ্ছা করে কি না?

ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ জানিয়ে প্রক্টরকে লেখা চিঠিতে বলেন, “আমাকে এমনও বলেছেন, ‘আই অ্যাম সরি টু সে, তুমি স্বাভাবিক না, তোমার ডাক্তার দেখানো উচিত।’ উনি বার বার আমাকে মানসিক চাপ দিতেন, ‘কেন কোনো অনুভূতি নাই? কেন উনাকে আমি ফিল করি না।’ উনি আমাকে এত বোঝাচ্ছেন, তবুও আমি সাড়া দিতাম না। উনি আমাকে এই বলে চিৎকার করে বলেন যে, ‘তুমি একটা নির্বোধ, অনুভূতিহীন গবেট।’

২০২৩ সালে এক শিক্ষিকার পরিবর্তে নাদির একটি কোর্সে ক্লাস নেওয়া শুরু করলে ওই শিক্ষার্থীর সাথে ‘যৌন উত্তেজনাকর’ কথায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ না করায় ক্লাসেও বিরক্তি প্রকাশ করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গত বছরের শুরুতে তিনি যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের কারণে মনোবিদের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হন।

সরকারি মেডিক্যালে ভর্তি হতে পারবে ৫৩৮০ শিক্ষার্থী: স্বাস্থ্যমন্ত্রীসরকারি মেডিক্যালে ভর্তি হতে পারবে ৫৩৮০ শিক্ষার্থী: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতের নাদির জুনাইদের বক্তব্যে জানতে একাত্তরের পক্ষ ফোন কল এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান একাত্তরকে বলেন, ওই শিক্ষার্থী আমার কাছে তার অভিযোগের একটি কপি দিয়েছেন। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আগামীকাল তিনি উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
ফখ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর