chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

স্বস্তিতে জরায়ু ক্যান্সার রোগীরা

পুরো চট্টগ্রামে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক) হাসপাতালে জরায়ু ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ব্র্যাকি থেরাপি মেশিন রয়েছে। টানা এক বছরেও অধিক সময় এই মেশিনটি অচল ছিলো। ফলে জরায়ু ক্যান্সার রোগীদের ঢাকা বা বিদেশে গিয়ে থেরাপি নিতে হয়েছে। অবশেষে সেই ব্র‍্যাকি থেরাপি মেশিন সচলে রোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।

জানা গেছে,চমেক ব্র্যাকি থেরাপি মেশিনটি ২০১৯ সালের মে মাসে স্থাপন করা হয়। সেবা চালু হওয়ার পর ২০১৯ সালে ৫৫ জন, ২০২০ সালে ৩৫ জন, ২০২১ সালে ১৬১ জনসহ মোট ২৫১ জনকে ব্র্যাকি থেরাপি দেওয়া হয়। যার ৭০ শতাংশ জরায়ু ক্যান্সার রোগী ছিলেন। এই থেরাপি সরকারিভাবে ১৫০০ টাকা এবং বেসরকারিতে ১১-১৫ হাজার টাকা গুনতে হয়। মেশিনটি গত বছরের ৬ জুন অচল হয়ে যায়। এক বছরেও অধিক সময় পড়ে চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর মেশিনটি সচল হয়। ফলে ক্যান্সার রোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। সপ্তাহে রবিবার ও বুধবার ব্র‍্যাকি থেরাপি দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে জরায়ু ক্যান্সার রোগী মর্জিনা আক্তার বলেন, গত ৫ বছর ধরে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত। মেশিন অচলের সময় আমার ব্র‍্যাকি থেরাপি তারিখ পড়ে। চট্টগ্রামে কোথাও এই চিকিৎসা নেই। পরে ঢাকা ক্যান্সার হাসপাতালে সিরিয়াল নিই।  সিরিয়াল আসে এক মাস পর। দ্রুত সিরিয়াল পাওয়া যায় না। পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে।  কিছু কিছু রোগীর  সিরিয়াল পেতে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে যায়। এখন চমেক হাসপাতাল সচল হলো। চট্টগ্রামেই থেরাপিটা দিতে পারবো।

এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালে রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে দিন দিন বাড়ছে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা। তার অন্যতম কারণ কিশোর বয়সীদের টিকা আওতায় না আনা। এছাড়া অল্প বয়সে বাচ্চা প্রসব, বহুগামিতা, জন্মবিরতিকরণ পিল খাওয়াসহ নানা কারণও রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের স্ক্রিনিং করা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা নেই। অনেক নারী জানেই না এই রোগ নিয়ে। অথচ একটু সচেতন হলে নীরবঘাতক রোগটি নির্মূল করা সম্ভব। জরায়ু ক্যান্সার রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশকে ব্র‍্যাকি থেরাপি দিতে হয়।

যারা চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের পরিবারের মেয়েদের কেন টিকা নিতে ও নিয়মিত স্ক্রিনিং করতে পরামর্শ দেওয়া হয় না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এতো রোগীর চাপ থাকে, আলাদা করে কথা বলার সময় হয়ে উঠে না।

তিনি আরও বলেন, যদি প্রতিটি অফিস-আদালতে, বিদেশ গেলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে স্ক্রিনিং বাধ্য করা হতো, তাহলে অন্তত মেয়েরা সচেতন হতো। এতে জরায়ু ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা কমে আসতো।

ব্র্যাকি থেরাপি সচল করার ব্যাপারে জানার জন্য চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, সচল হয়েছে বলতে ভয় লাগে এখন। কারণ মেশিনগুলো সচল হতে হতে অচল হয়ে যায়। তবে এক বছর পর ব্র‍্যাকি থেরাপি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।

 

 

নচ/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর