গ্যাস সংকটে তিন গুণ বেড়েছে এলপিজি বিক্রি
দুদিন ধরে চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাসের চরম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। নগরের বাসা-বাড়ি ও রেস্তোঁরায় চুলা জ¦লেনি। ফিলিং স্টেশনে তৈরি হয়েছে গাড়ির বাড়তি চাপ। সড়কে গ্যাসচালিত পরিবহন কমে আসায় কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হওয়া মানুষকে বিপাকে পড়তে হয়েছে।
ভোগান্তি এড়াতে অনেকে রান্নাসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে মাটির চুলার ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। নগরের জামালখান এলাকার বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, গতকাল থেকে গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্না হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমাদের রেস্তোঁরা থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হয়েছে। আজ মাটির রান্নায় চুলায় রান্না করতে হবে।
এদিকে পাইপলাইনে সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাসা-বাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি আগের চেয়ে তিনগুন বেড়ে গেছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গোউাউনে মাল না নিয়ে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তবে চাহিদা বাড়লেও দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান তারা।
নগরের কাজীর দেউড়িতে এলিপিজির গ্যাসের গোউাউন রয়েছে রঙধনু এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আসিফের। বিক্রি বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, গতকাল থেকে আমাদের বিক্রি বেড়ে গেছে। ১২ কেজি ওজনের এলপিজি চাহিদা সর্বাধিক। আজ সকাল থেকে বিক্রি আরও বেড়ে গেছে। আগে যেখানে দৈনিক ১৫ টি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হতো, সেখানে আজ ৫০ টি অর্ডার পেয়েছি। চাহিদা বেশি থাকায় মাল গোডাউনের নেওয়ার আগে বিক্রি হয়ে হচ্ছে। অনেকে গোডাউনে এসে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে যাচ্ছে। আগের দামে সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে।
বাসা-বাড়ির পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির কথা জানান ব্যবসায়ী আসিফ।
নগরের কালামিয়া বাজারের উৎসব এন্টারপ্রাইজের গাড়িভর্তি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে টাইগারপাস মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন বিক্রয় কর্মী মো. শফিক। গাড়িতে বিভিন্ন ওজনের ৭০টি সিলিন্ডার ছিল।
মো. শফিক জানান, গতকালের চেয়ে দুদিনে বিক্রি বেড়েছে। সকালে নগরের বিভিন্ন জায়গায় তিন গাড়ি গ্যাস সিলিন্ডারের অর্ডার পেয়েছেন। সন্ধ্যায় আরও দুই গাড়ি অর্ডার রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রকোপ এড়াতে কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর থেকে গ্যাস সরবর্হা বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল দুপুরের দিকে নগরের কিছু কিছু এলাকায় গ্যাস পাওয়া যায়। তবে রোববার (১৪ মে) নগরের কার্যত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে গণমাধ্যমকর্মী ও কেজিডিসিএল কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন।
কর্ণফুলী গ্যাস ড্রিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে ছয় থেকে সাতদিন লাগতে পারে জানিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় এলএনজি বন্ধ থাকবে বলে জানান তারা।
আরকে/