chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে তেল বীজ উৎপাদন বেড়েছে কয়েক গুন

চট্টগ্রামে কৃষকরা  তেলবীজ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং প্রণোদনার পাওয়ায় সরিষার চাষাবাদ তিন গুণ বেড়েছে । একই সঙ্গে সূর্যমুখী আবাদ প্রায় ছয় গুন বেড়েছে। ফলে পারিবাবিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে লাভভান হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান কাজের গতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব হলে আগামী বছরে সরিষাসহ তেল বীজ চাষাবাদ কয়েক গুন বাড়বে।

কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে বছরে প্রায় ২৪ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে শর্ষে, তিল ও সূর্যমুখি থেকে উৎপাদন হয় ৩ লাখ টন। যা মোট চাহিদার মাত্র ১২ ভাগ। বাকি ভোজ্যতেল আমদানির ওপর নির্ভর করে।  ফলে প্রতি বছর সরকারকে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় করতে হয়।

আর বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ১৩ লাখ ৫৫ হাজার টন পাম তেল এবং ৭ লাখ ৮০ হাজার টন সয়াবিন তেল সয়াবিন আমদানি হয়েছে। মোট ১১ লাখ ৩৫ হাজার টন ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ১৮৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।

আমদানি রেস টেনে ধরতে দেশে এলাকাভেদে সরিষা, সূর্যমুখী, সয়াবিন, তিল ফসলের আবাদ বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশীয় তেল বীজ উৎপাদন ৪ গুন বাড়ানো নিয়ে কাহ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ভোজ্যতেল উৎপানের জোর দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চট্টগ্রামের ১৫ টি উপজেলায় ২ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।  গত বছর এ উৎপাদনের হার ছিল ৭১১ হেক্টর জমিতে। সূযমুর্খির আবাদ হয়েছে ১১০ হেক্টর জমিতে। গত বছর এই উৎপাদনের হার ছিল ১৫ হেক্টর জমিতে। বর্তমানে কৃষকরা সরিষা ভাঙানোর কাজ করছেন।  এ বছরে ১১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমূখির আবাদ হয়েছে।  আগের বছরে ছিল ১৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের পাশাপাশি এসব ফসলি মাঠ এখন রুপ নিয়েছে বিনোদন কেন্দ্রে। এসব উপজেলার মধ্যে হাটহাজারী, রাউজান, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া উপজেলায় সরিষা চাষে কৃষকদের মাঝে বিপুল উৎসাহ দেখা গেছে। মূলত কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে উৎপাদন তিন গুন বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবদুচ ছোবহান বলেন, সরকার কৃষদের মাঝে উপকরণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তেল বীজ জাতীয় উৎপাদনে জোর দিয়েছে। ভালো ফলনের আশায় কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহ পাচ্ছে। এভাবে চলমান কাজের গতিশীলতা ধরে রাখতে পারলে সামনের বছরে সরিষাসহ তেল জাতীয় শষ্য আরও কয়েক গুণ বাড়বে।

এদিকে উৎপাদিত ফসল পাইকারি পর্যায়ে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয় মিলে ভাঙিয়ে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করছে বলে জানালেন ফটিকছড়ির উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, এবার ফলন ভালো। এতে চাষিরা খুবই খুশি। সার-কীটনাশকের দামও হাতের নাগালে। দাম ভালা পাওয়ায় তারা তেল বীজ উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে। অনেকে এসব তেল বীজ চাষাবাদ দেকতে মাঠে ছুটে আসছেন।

আরকে/নচ/

এই বিভাগের আরও খবর