chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

দিয়াজের মৃত্যুর তদন্তের ভার পিবিআইয়ের হাতে

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর হত্যা মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় সিআইডির দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদন বিরুদ্ধে নারাজির আবেদনের পর আদালত এই রায় দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসেন জুনায়েদ এর আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি মামলার সকল আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল আদালতে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের মৃত্যুকে শ্বাসরোধজনিত হত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু ছয় বছর তদন্তের পর সিআইডি প্রতিবেদনে দিয়াজকে কেউ হত্যা করেনি, আত্মহত্যা করেছিল বলে জানায়। এতে অনেক আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতির বিষয়টি উল্লেখ করেন। তবে ওই সময় মামলার বাদী ও দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি আদালতে নারাজির আবেদন করবেন বলে জানিয়েছিলেন।

জানতে চাইলে দিয়াজের বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাইদা সরওয়ার চৌধুরী নীপা বলেন, আমাদের নারাজি আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেননি আদালত। পিবিআইকে একজন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবদেন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

দিয়াজের মায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, চবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, চবি ছাত্রলীগের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি আবুল মনসুর জামশেদ, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি মনসুর আলম, সাবেক সহ সভাপতি আবদুল মালেক, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আরমান, সাবেক প্রচার সম্পাদক রাশেদুল আলম জিসান ও সাবেক আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চবির উত্তর ক্যাম্পাসের নিজ বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ। এ ঘটনার তিনদিন পর ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণকাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে আসছিল।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন। জাহেদা আমিনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দিয়াজের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। ২০১৭ সালের ৩০ জুলাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, দিয়াজের শরীরে আঘাতজনিত জখমের মাধ্যমে হত্যার আলামত আছে। এর প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

আরকে/

এই বিভাগের আরও খবর