chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিদেশে প্রবাসীদের আইন মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেসব দেশে কাজ করেন, তাদেরকে সেসব দেশের আইন কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইনভঙ্গ করে কেউ কোনো অপরাধে যুক্ত হলে বাংলাদেশ তাদের বাঁচাতে ন্যূনতম প্রচেষ্টাও চালাবে না বলে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন তিনি।
বুধবার কাতারে বাংলাদেশ এমএইচ স্কুলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, কোনো ব্যক্তির অপরাধে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে বরদাস্ত করা হবে না।

তিনি বলেন, যে দেশে থাকবেন সে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। যেমন— আপনি কাতারে আছেন, এ দেশের যেটা প্রলিত আইন সেটা আপনাদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

সরকার প্রধান বলেন, কেউ যদি এই আইন ভঙ্গ করেন বা আইন ভঙ্গ করে কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন, সেই দায় দায়িত্ব আমরা (সরকার) নেব না, কেউ নেবে না। যে দেশে অবস্থান করেন সেই দেশের আইন যদি না মানেন তাহলে সেদেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। কোনো অপরাধির দায়িত্ব সরকার নেবে না।

তিনি বলেন, কেউ যদি কোনো আপরাধে জড়িয়ে পড়েন তাহলে আমরা উদ্ধার করার কোনো চেষ্টা করবো না। কোনো ব্যবস্থাও নেব না। সেটা স্পষ্ট বলে দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, একজনের জন্য অন্য মানুষগুলো কষ্ট পায়। তাদের বিপদ হয়। সেজন্য আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েই লোক পাঠাতে চাই। কিন্তু প্রশিক্ষণটাও অনেকে ঠিকভাবে নেন না।

ট্রেনিংয়ের সময়কার টাকাটা নিয়ে অনেকে ঘুষ দিয়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন মর্মে তথ্য রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে এই বার্তাটা পৌঁছে দেবেন, এখানে কেউ যদি কোনো অপরাধ করেন সেই অপরাধের দায় দায়িত্ব বাংলাদেশ নেবে না। এটা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই। কারণ আমাদের এসব কথা শুনতে হয়। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এবং প্রবাসে লোক পাঠাবার যে সুযোগটা আমরা পাই সে সুযোগটাও হারিয়ে যায়। আরো ১০টি মানুষের কাজের যে সুযোগ থাকে সেটা তারা পায় না। একটি মানুষের অপরাধের জন্য অন্য মানুষ শাস্তি পায়।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ায় আপনারাও বুক ফুলিয়ে বলতে পারেন ‘আমার দেশ বাংলাদেশ’। সেখানে কারো কোনোঅপরাধের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে তা মেনে নেয়া যায় না। এটা সহ্য করা যায় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমি এতিম ও নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে দেশে এসেছি (’৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর ছয় বছর প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হয়ে) কেবল দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য।

তিনি বলেন, আজকে অন্তত এটুকু বলতে পারি দেশের মানুষের জন্য দু’বেলা দু’মুঠো খাবার ব্যবস্থাটা করতে পেরেছি। তাদের জীবন মান উন্নত করার পদক্ষেপ নিয়েছি। গৃহহীনকে ঘরবাড়ি করে দিচ্ছি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি, রাস্তা-ঘাট যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি।

বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামান্য একটু বেশি পাওয়ার লোভে অনেক সময় বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। সেটা আপনাদের বিবেচনায় থাকা উচিত।

এ সময় ধোকায় পড়ে বিদেশে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার না হয়ে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে প্রশিক্ষণ নিয়ে বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার জন্যও সবাইকে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে আজকে বাংলাদেশে শবে বরাতের রাত হওয়ায় সবার কাছে দোয়া কামনা করেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ারও দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর