chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আবাসনখাতে অস্থিরতা : নির্মাণ শিল্পের ২৩ ক্যাটাগরির পণ্যে বাড়ছে দাম

আবাসন ও নির্মাণ শিল্পে নির্মাণসামগ্রীর ইট, রড, সিমেন্ট, বিটুমিনের মতো ২৩ ক্যাটাগরির পণ্যের দাম সরকারি পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে। তাই সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের আবাসন ব্যবসায়ী ও বাড়ি-ঘর নির্মাণ করতে যাওয়া মানুষ সংকটে পড়ছে। সরকারি পর্যায়ে নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ানোয় নির্মাণ খরচও বেড়ে যাবে।

চট্টগ্রামের আবাসন ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, বাজারে এই পণ্যগুলোর দাম বেড়ে যাবে এবং বেসরকারি আবাসনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারা বলছেন, সরকারি পর্যায়ের ঠিকাদারদের জন্য বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়ার কারণে শিগগিরই সব ধরনের নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়তে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের আবাসন ব্যবসায়ীরা জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব চৌধুরী আশরাফুল করিম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি প্রকল্পের ঠিকাদারদের জন্য দুই ধরনের ইট, ছয় ধরনের সিমেন্ট, ৯ ধরনের এমএস রড, ছয় ধরনের বিটুমিনসহ মোট ২৩ ধরনের নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ পুনর্নির্ধারিত দর সব দফতরের দর তফসিলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকারি প্রকল্পের ঠিকাদারদের জন্য এই ২৩ ধরনের নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ানোর ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব)।

চট্টগ্রাম রিহ্যাব মেম্বার এ এস এস আব্দুল গফফার মিয়াজি বলেন, সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদফতরের ২৩ ধরনের পণ্যের দাম পুনর্নির্ধারণ করায় তা শেষ পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে কর্মরত ঠিকাদারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বেসরকারিভাবে যারা নির্মাণ কাজে জড়িত তাদের ওপরও এর প্রভাব পড়বে। ফলে বেসরকারি পর্যায়ে এই ২৩ নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাবে এবং অ্যাপার্টমেন্টের দামও বেড়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত বর্ধিত দাম ক্রেতার ওপর বর্তাবে। ক্রেতাকে বেশি দাম দিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে হবে। আবাসন একটি মৌলিক চাহিদা, এটা দেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি চাহিদা। এই মৌলিক চাহিদা পূরণে আরো চাপে পড়বে জনগণ।

একাধিক আবাসন কোম্পানির কর্মকর্তারা বলেন, সরকারি পর্যায়ের ঠিকাদারদের জন্য নতুন দাম নির্ধারণ করায় রড, সিমেন্ট, ইট, বিটুমিনসহ নির্মাণ শিল্পের অন্যান্য সামগ্রীর বাজার দামের ওপর এর প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ বাংলাদেশে খুব সহজেই যেকোনো পণ্যের দাম বেড়ে যায়, সরকারও এতে হস্তক্ষেপ করে কমাতে পারে না। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ যারা সারাজীবন ধরে তিল তিল করে কিছু সঞ্চয় করে ফ্ল্যাট কেনার জন্য। তাদের ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন পূরণ হবে না অথবা আরো দেরি হবে।

প্রজ্ঞাপনে প্রথম শ্রেণীর বেশি পোড়া বা ঝামা ইটের দাম ১০ টাকা থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকায়। আর অটোমেটিক মেশিনে তৈরি এক নম্বর গ্রেডের ইটের দাম ১১.৫ টাকা থেকে ৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৬ টাকায়। মানভেদে ইটের দাম ৩০ শতাংশ থেকে ৩৯ শতাংশ বাড়িয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নির্মাণকাজের শিডিউল অব রেট পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনের আওতায় ইট ছাড়াও প্রধান নির্মাণ উপকরণ বিটুমিনের দাম ৪২ শতাংশ, সিমেন্টের দাম ২২ শতাংশ ও রডের দাম ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

প্রতি কেজি বিটুমিনের [গ্রেড ৬০/৭০] রিটেইল পর্যায়ে দাম চট্টগ্রাম বিভাগে ৩২ শতাংশ এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় ৩৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। একই গ্রেডের বিটুমিনের বাল্ক দাম
চট্টগ্রাম ও সিলেটে ৩৮ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়েছে। প্রতি বস্তা অর্ডিনারি পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের দাম খুচরা পর্যায়ে ৭০ টাকা ও বাল্ক সংগ্রহে ৮০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ৪৯০ টাকা থেকে ১৪ শতাংশ বাড়িয়ে খুচরা সিমেন্টের দাম ধরা হয়েছে ৫৬০ টাকা। আর ৪৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে বাল্ক সংগ্রহে প্রতি বস্তা সিমেন্টের দাম ধরা হয়েছে ৫২০ টাকা। এ হিসাবে পাইকারি সিমেন্টের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ ।

এই বিভাগের আরও খবর