chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে মিলছে জটিল সব রোগের চিকিৎসা

প্রতি বছর আমাদের দেশের অনেক রোগী ও স্বজনদের চিকিৎসার জন্য উড়াল দিতে হয় ভারতে। সেখানে চিকিৎসাসহ  যাবতীয় কাজ সারাতে গিয়ে তাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। তবে প্রতিবেশী দেশ ভারতে হওয়া বেশ কিছু বিশেষায়িত ও জটিল রোগের চিকিৎসা মিলছে দেশেই। যদিও সঠিক তথ্য ও অসচেতনার অভাবে অনেক রোগী ও স্বজনরা এসব সুবিধার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। ফলে রোগীদের ভোগান্তির যেনো শেষ নেই।

বর্তমানে সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি খাতে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতাল চিকিৎসা সেবায় অনন্য নজির স্থাপন করেছে।হাসপাতালটিতে প্রথমবারের মতো অ্যাওয়েক ক্র্যানিওটোমি সার্জারি, বোন ম্যারো ট্র্যান্সপ্ল্যান্টেশন, বাইল্যাটেরাল নীরিপ্লেসমেন্ট সার্জারি, বোটক্স ব্যবহার করে সার্ভিক্যাল ডিসটোনিয়া, স্ট্রোক থ্রোম্বলোসিস প্রসিডিওর ব্রেইন টিউমার রিমুভ্যাল সার্জারি, থোরাসিক এন্ডোভাসক্যুলার অ্যারোটিক রিপেয়ার (টিই ভি এ আর) প্রসিডিওর, ভাটিব্রা জোড়া লাগানোর ক্ষেত্রে এম আই এস (মিনিম্যালি ইনভ্যাসিভ সার্জারি) এবং পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি প্রসিডিওরসহ বেশকিছু মাইলফলক অর্জন করেছে। হাতের মুঠোয় সব ধরনের সেবা পাওয়ায় রোগী ও স্বজনদের মাঝেও স্বস্তি বিরাজ করছে।

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি)  এভারকেয়ার হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে ‘চিকিৎসার জন্য বিদেশ কেন’শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত হয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে  বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিরা  বিদেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগীদের প্রতিবন্ধকতা ও বিভিন্ন ভোগান্তির বিষয় তুলে ধরেন।

এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের চিফ অপারেটিং অফিসার সামির সিং বলেন, যারা দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যান তাদের ভাষা সংক্রান্ত জটিলতা, অপরিচিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ব্যবস্থা, দীর্ঘ অপেক্ষা এবং মাত্রাতিরিক্ত খরচসহ নানা ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। এছাড়া নিজের বাড়ি ও প্রিয় মানুষদের কাছ থেকে এতো দূরে অবস্থান করার কারণে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। ফলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন অনেকেই। আর চিকিৎসার ফলো-আপের জন্য বারবার আসা-যাওয়ার ঝামেলা, আর্থিক চাপ ও নিত্য জীবনযাপনে ব্যয় তো আছেই। সেই সঙ্গে মেডিক্যাল ভিসা পাওয়ার অনিশ্চয়তা, ভিসার জন্য দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা এবং রোগীর সাথে যিনি থাকবেন তার কাজ থেকে ছুটি নেওয়াসহ নানান ঝামেলা রয়েছে।

ডিরেক্টর মেডিকেল সার্ভিসেস ডা. দীপক সিং বলেন, এভারকেয়ার হসপিটাল তাদের অত্যাধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা এবং দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীকে সর্বোচ্চ মানের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের আজকের এই আলোচনার উদ্দেশ্য হলো চট্টগ্রামে বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি মানুষকে জানানো এবং দেশে চিকিৎসা নেওয়া সুফলসমূহ তুলে ধরা।

হাসপাতালের জেনারেল অ্যান্ড ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. সুরমান আলী বলেন, এভার কেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামবাসীকে সর্বোচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবা দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আশা করছি, আজকের এই গোলটেবিল আলোচনা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শহরে যে অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাচ্ছে সে বিষয়ে মানুষকে জানাতে পারবো। ঘরের কাছেই প্রয়োজনীয় সেবা নিতে উৎসাহিত করতে পারবো।

আলোচনায় চিকিৎসা সেবায় সর্বশেষ অগ্রগতি, বিদেশের তুলনায় এভারকেয়ার হসপিটালের কম চিকিৎসা ব্যয় এবং বিদেশে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে গিয়ে রোগীদের নানান ভোগান্তিসহ বেশকিছু বিষয় উঠে আসে। এছাড়া ফলোআপের জন্য বারবার বিদেশ আসা-যাওয়ার ঝামেলা, রোগী ও রোগীর পরিবারের সদস্যদের উপর মানসিক চাপ, ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা এবং ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।

এভারকেয়ার গ্রুপ বিশ্বাস করে যে স্বাস্থ্যসেবা একটি মৌলিক অধিকার।  প্রতিষ্ঠানটি উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের চাহিদা পূরণে প্রাইভেট ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃড় সমর্থক হিসেবে উদীয়মান বাজারে বসবাসরত সকল বয়সের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে সাড়া দিয়েছে এভারকেয়ার। সেই সুবাদে প্রতিষ্ঠানটি প্রচলিত স্বাস্থ্যসেবার ধারা পরিবর্তন ও রূপান্তর করণের মাধ্যমে ক্রস-কন্টিনেন্টস প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ে তাদের উন্নত ও মানসম্মত মেডিকেল সেবা সরবরাহ করছে।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কেনিয়া এবং নাইজেরিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার উদীয়মান বাজারজুড়ে তাদের সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে এভারকেয়ার। ৩০টি হাসপাতাল, ১৬ টি ক্লিনিক, ৮২ টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই প্রতিষ্ঠানের পোর্টফোলিও’র অন্তর্ভুক্ত। দেশের উদীয়মান বাজারে একটি সিস্টেম্যাটিক স্বাস্থ্যসেবা তৈরি করতে প্রায় ১১ হাজার ৫০০ কর্মী নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। একটি বিচিত্র স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এভাবকেথার গ্রুপ গর্বিত। এভারকেয়ার হেলথ ফান্ড-এর মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান এভারকেয়ার, যা উদীয়মান বাজারে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমতুল্য রাইজ ফান্ডস পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা তহবিল। যা বৈশ্বিক বিকল্প সম্পদ ব্যবস্থাপক টিপিজি’র প্রভাব বিনিয়োগের একটি প্ল্যাটফর্ম। এভারকেয়ার স্বাস্থ্য তহবিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবিত বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান।

 

সাআ / আরকে/ চখ