চট্টগ্রামে চুপিসারে পরিযায়ী পাখি শিকার চলছেই
শীত বাড়তেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন জলাশয়ে দেখা মিলছে পরিযায়ী পাখিদের। কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ, চর চাক্তাই, বাকলিয়া ক্ষেতচর, কালদীয়ার চর, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত, বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ, পটিয়ার শ্রীমাই, শিকলবাহ, কাপ্তাই, রাঙ্গুনিয়ার রাণীরহাট, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের উপকূলীয় এলাকায় দেখা মিলছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
চট্টগ্রামের এক পক্ষী-প্রেমী আব্দুল্লাহ আল হেলালী চট্টলার খবরকে বলেন, ‘‘সম্প্রতি লেসার-হুইসলিং ডাক (সরাল), কটন-পিগমি গুজ, টাফটেড ডাক, রাডি শেল ডাক সহ বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি পাখির দেখা মিলছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও বিভিন্ন জায়গায় হাঁস জাতীয় পাখি, সরাল, বগসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার চলছে চুপিসাড়েই।
বাকলিয়ার এক পক্ষী-প্রেমী আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘ নগরের নতুন ব্রিজ ভেড়া মার্কেট এলাকায় রাতের দিকে জাল পেতে চোরাশিকারিরা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই তাঁরা জাল গুটিয়ে নিচ্ছে। তবুও আমরা নজর রাখছি, যাতে এই পাখি শিকার বন্ধ করা যায়।’’
বোয়ালখালীর কালুরঘাট এক পরিবেশ কর্মী সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় কোথাও জাল পেতে কোথাও আবার তির-ধনুক নিয়ে পাখি শিকার চলছেই। তবে এ বছর তুলনামূলক ভাবে চোরাশিকারিদের কম চোখে পড়ছে। শীত আরো বাড়লে তাদের কারবার বাড়তে পারে। প্রশাসনের উচিত পাখি শিকার বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নেয়া।’’
তবে চোরা শিকারিদের রমরমা অনেকটাই কমেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
আনোয়ারা উপজেলার পারকিনএলাকার বাসিন্দা বিধান দাশ বলেন, ‘‘শীতকাল শুরু হতেই পারকি সমুদ্র সৈকতে এবং কর্ণফুলী নদী ও বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় খাল ও বিলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসে। আগে তীর ধনুক, পাখি মারা বন্দুক নিয়ে শিকারিদের দেখা যেত। তবে এখন তাদের আর প্রকাশ্যে দেখা যায় না। তবুও চুপিসাড়েই অনেকেই পরিযায়ী পাখিদের শিকার করে।’’
পরিবেশবিদ মো. ইমতিয়াজ আহমদ বলেন, ‘‘পরিযায়ী পাখিরা আমাদের অতিথি। অনেক প্রজাতির পাখি এখন বিলুপ্তির পথে। ফলে পাখি শিকার বন্ধ করতে বন বিভাগ ও প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’’
চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চট্টলার খবরকে বলেন, ‘‘পাখি শিকার অনেকটাই কমেছে। মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় অভিযান, মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার নুপুর মার্কেটের একটি দোকানে খাঁচায় রেখে বিক্রির সময় ২৫টি পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৬টি টিয়া পাখি, ১৮টি মুনিয়া ও ১টি ময়না পাখি।
তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী এসব পাখি বিক্রি অবৈধ। তাই আমরা এগুলো উদ্ধার করে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দিয়েছি।’
মআ/চখ