chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

নামে-বেনামে হাজার টাকা হাতাচ্ছে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ক্যাব চট্টগ্রামের উদ্বেগ

চলতি বছরের শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়েছে। স্কুলে স্কুলে শুরু হয়েছে ভর্তি কার্যক্রম। সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি নির্ধারিত হলেও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো বাধা-ধরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ও নীতিমালা উপেক্ষা করে ভর্তি ও পুনঃ ভর্তির নামে শির্ক্ষাথীদের কাছ থেকে নিয়মবর্হিভুত ভাবে স্কুলে ভর্তির সময় পুনঃভর্তি, উন্নয়ন ফিস, ডিজিটাল ফিস, টিসি গ্রহনের সময় পুরো বছরের ফিস আদায়, নতুন সেশনে ভর্তির ইত্যাদির নামে-বেনামে হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারমধ্যে চট্টগ্রামের সিটিকর্পোরেশন, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বন্দর, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বেপজাসহ বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কঠোর ভাবে মনিটরিং করে বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

বুধবার( ২১ ‍ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে উপরোক্ত দাবি জানায় ক্যাব।

বিবৃতিতে বলা হয় , ডিসেম্বর মাস থেকে নগরীতে শুরু হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি বাণিজ্য। সরকারী ও নামীদামী স্কুলে ভর্তির জন্য কোচিং ব্যবসা, ভর্তির সময় ডোনেশন, বিভিন্ন ফিস আদায় করে মধ্যবিত্ত সহ সকল নাগরিকদের মাঝে শিক্ষা অধিকারের পরিবর্তে একটি অতি খরচ নির্ভর পণ্যে পরিণত হয়েছে। একজন সাধারন নাগরিককে ভর্তি, পুনঃ ভর্তি, টিউশন ফিস, বাই-খাতা ইত্যাদির নামে এতো খরচের বোঝা চাপানো হচ্ছে, যার ভারে মধ্যবিত্তের জীবন মরার উপর খারায় ঘাঁ যেন নিত্য সঙ্গী। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন ভর্তি, পুনঃ ভর্তি, টিউশন ফিস ও টিসির টিস আদায়ের কোন নিয়ম নীতি মেনে চলার নজির পাওয়া যাচ্ছে না, যে যার ইচ্ছামতো গলাকাটা ভাবে আদায় করে পকেট ভর্তি করছে। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহে শির্ক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নীতিমালা উপেক্ষা করে যে যার মতো ফিস আদায় করছে।

সেখানে উল্লেখ করা হয়,  ডিসেম্বর শুরুর বহু পুর্বেই শুরু হয়েছে ভর্তি কোচিং বাণিজ্য, আবার সরকারী স্কুলে স্কুলের ক্লাসের সাথেই চলছে কোচিং, অতচ এগুলি তদারকির দায়িত্বে যারা নিয়োজিত জেলা শিক্ষা অফিস, শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা প্রশাসন দিবা নিদ্রায় ভগ্ন। জেলা প্রশাসন কিছু কিছু উদ্যোগ নিলেও শিক্ষা প্রশাসনের নিরবতায় অনিয়ম ও অপরাধগুলো চাল-ডাল ও সবজির মতো ব্যবসায়ীদের একই ধরনের আচরণ করছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয় বৈশ্বিক করোনার প্রভাবে বিগত দুই বছর এ ধরণের গলাকাটা ভর্তি ফিস আদায়ের মতো অনিয়মগুলো বন্ধ থাকলেও বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় যেখানে মানুষ সংসার চালাতে হিমসীম সেখানে ভর্তি ও পুনঃভর্তির নামে গলাকাটা ফিস আদায় মরার ওপর খারার ঘা হিসাবে দেখা দিয়েছে। আবার এ সমস্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা হলেও তাঁরাও অনিয়ম বন্ধে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালেয়র প্রজ্ঞাপনকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি প্রদর্শনে প্রতিযোগিতায় সামিল হয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, বন্দর, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত সেবা সংস্থা গুলি পরিচালিত স্কুলগুলিও এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে সাধারন ও ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানের মতো বাণিজ্যিক কর্মকান্ড পরিচালনা করলে অন্যান্য ব্যক্তি উদ্যোক্তাগন অবশ্যই জনগণের পকেট কেটে নিজের পকেট ভারী করবে। তাই তাদের এ ধরনের আচরণ পরিহার করা উচিত বলে অনতিবিলম্বে এ ধরনের আচরণ পরিহারের দাবি জানান।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব পাচলাইশের সাধারন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

নচ/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর