শারদীয় দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে পড়ায় পাড়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছেন যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী।
সোমবার বিকেলে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় এনায়েত বাজার ওয়ার্ড এলাকার পূজামণ্ডপ কমিটি সমূহের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এই প্রস্তাব জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে প্রশাসনের পাশাপাশি স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে পাহারাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।’
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক এই উপ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘যারা ধর্মের নামে মন্দির, মসজিদ, গীর্জায় সাম্প্রদায়িক হামলা করে তারা সমাজের শত্রু,দেশের শত্রু, ধর্মের শত্রু।যারা এই ধরণের হামলা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে তাদের জায়গা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলাদেশে হবে না।বিএনপি-জামাত চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বারংবার সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়েছে হিন্দুদের বাড়ী ঘরে,মন্দিরে ভাংচুর চালিয়েছে।তাদের প্রতি সাবধান করে বলতে চাই যদি কোন প্রকার সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয় তবে সকল শ্রেণী পেশার মানুষদের সাথে নিয়ে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
এনায়েত বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভার সঞ্চালনা করেন সাবেক ছাত্রনেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরী। সভায় বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত কাউন্সিলর নিলু নাগ, ম এড. শ্রীপতি কান্তি পাল ,মহানগর পূজা কমিটির সদস্য বিলু ঘোষ, সরোয়ার জাহান সারু,সুজিত ঘোষ প্রমূখ।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গোলাপ সিং লেন মজুমদার বাড়ী পূজা মন্ডপের সভাপতি অনিন্দ মজুমদার শ্যাম, সম্পাদক আনন্দ মজুমদার স্নীগ্ধ, শ্রী শ্রী মঙ্গলময়ী কালিবাড়ী মন্ডপের সভাপতি টুটুল ঘোষ,সম্পাদক গৌতম ঘোষ, শ্রী শ্রী ব্রজধাম পূজা কমিটির সভাপতি শিমুল কুমার দাশ,সম্পাদক রানা দাশ,মহিলা সমিতি গোয়ালপাড়া পুকুর পাড় পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিনা চৌধুরী,সম্পাদক রিতা রক্তি,যুগ্ন সম্পাদক দেবিকা ঘোষ, গোয়ালপাড়া শিল্পী সংঘের সভাপতি শৈবাল ঘোষ মিমো,সম্পাদক ছোটন ঘোষ,সনাতন ধর্ম সংসদের সভাপতি উত্তম দে,সম্পাদক বিপ্লব দে, কোষাধ্যক্ষ টুটুল মজুমদার,১নং এনায়েত বাজার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুদীপ কুমার মিত্র,সম্পাদক সঞ্জিত ভট্টাচার্য, নন্দনকানন ১নং গলি পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ঘোষ অমিত,সম্পাদক রাকেশ দাশ, বাবুলাল ঘোষের বাড়ী পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মুন্না ঘোষ,সম্পাদক বিকাশ ঘোষ,এয়ারবেল কারু পূজা কমিটির সভাপতি প্রণব চৌধুরী কুমকুম,সম্পাদক দীপংকর রুদ্র,রথের পুকুর পাড় বালক সাধু আশ্রম পূজা কমিটির সভাপতি সুমন মজুমদার, সম্পাদক মৃনাল কাম্তি দত্ত, শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি জীবন দে,সম্পাদক টিপু মিত্র, লাভলেন সেবক কলোনী পূজা কমিটির সভাপতি হরি রাম দাশ,সম্পাদক আরমান দাশ, রেলওয়ে কলোনী পূজা কমিটির সভাপতি বাবুল চক্রবর্তী, সম্পাদক আশীষ চৌধুরী,জুবলী রোড় পূজা কমিটির সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ,সম্পাদক কমল সাহা প্রমুখ।
গেলো বছর দূর্গা পূজায় কুমিল্লায় পূজা মন্ডপে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা নিয়ে সারা দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে জুমার নামায শেষে মিছিল বের করে মুসল্লীরা। মিছিল থেকে নগরীর জেএমসেন হলসহ বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত’ প্রতিমা বিসর্জন না দেয়ার ঘোষণা দেয় পূজা উৎযাপন পরিষদ। পরবর্তীতে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা, নগর পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ও পূজা উৎযাপন পরিষদের নেতাদের কয়েক দফা বৈঠকের পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়।