chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের মাইলফলক টাইগারদের

বিশ্ব চ্যাম্য়িান ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে চার উইকেটে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়ের মাইলফলক গড়লো টাইগাররা। তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিজেদের করে নিলো সাকিব আল হাসানের দল।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ইতিহাস গড়তে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১১৮ রান। পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল টাইগাররা।

তবে আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অনবদ্য ইনিংসে ভর করে ৭ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেন সাকিববাহিনী।

প্রথম টি-টুয়েন্টির জয়ের নায়ক ও হাফ সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হাসান শান্ত আজ ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অপর প্রান্তে মাত্র ৩টি বল খেলে দুই চারের সাহায্যে ৮ রান তুলে দলকে জয়ের বন্দরে নেন তাসকিন আহমেদ।

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানোর এইদিনে ব্যাটে-বলে উজ্জ্বল ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। বল হাতে মাত্র ১২ রানে ৪ উইকেট নেওয়া মিরাজ ব্যাট হাতে ১৬ বলে ২ ছক্কায় করেন ২০ রান।

ইংলিশদের হয়ে বল হাতে জোফরা আর্চার ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে চাপে ফেলেছিলেন। এছাড়া স্যাম কারান, মঈন আলী ও রেহান আহমেদ একটি করে উইকেট নেন।

টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব। তবে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে আজ ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে নামেননি অধিনায়ক জস বাটলার।

তাই ফিল সল্টের সঙ্গে ব্যাটিং উদ্বোধনীতে আসেন ডেভিড মালান। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ ১০ রান দিয়ে দেন। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারে মালানের উইকেট তুলে নেন দেশসেরা এই পেসার।

দলীয় ১৬ রানের মাথায় তার অফস্টাম্পের বাইরের বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে থার্ডম্যানে থাকা হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৫ রান করে ফেরেন এই ব্যাটার।

এরপর ডানহাতি বাঁহাতি কম্বিনেশন ধরে রাখতে তিনে ব্যাট করতে নামেন অলরাউন্ডার মঈন আলী। সল্টকে সঙ্গ দিয়ে ইনিংসে হাল ধরেন তিনি।

এই জুটি পাওয়ার প্লেতে দলের রান পঞ্চাশও ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যান। তবে সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব।

নিজের দ্বিতীয় বলেই সল্টের উইকেট তুলে নেন টাইগার কাপ্তান। নিজের বলেই দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ফিল সল্টকে ২৫ রানেই সাজঘরে ফেরান সাকিব। সাকিবের পর বোলিয়ে এসে নিজের প্রথম ওভারেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলারের উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ।

টাইগার পেসারের স্বপ্নের মতো এক ইয়র্কার ডেলিভারিতে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাটলারের উইকেট নেন হাসান। ওপেনিং পজিশন থেকে চারে নেমে ডানহাতি এই বিধ্বংসী ব্যাটার ৬ বল টিকে করেন মাত্র ৫ রান। বাটলার ফেরার পর মঈনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন বেন ডাকেট।

দুই বাঁহাতির সামনে মিরাজকে আনতে দেরি করেননি সাকিব। আঘাত করতে দেরি করলেন না মিরাজও। মঈনের স্লগ সুইপ ডিপ মিডউইকেটে ফিল্ডারের কাছে গেছে সোজা ক্যাচ।

ফলে ৫৭ রানের মধ্যে ইংল্যান্ড ৪ উইকেট হারিয়ে বেসামাল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে দলকে ট্র্যাকে ফেরাতে বেন ডাকেট আর স্যাম কারান জুটি মিলে ৩৪ রান করেন।

তবে এরপরই জোড়া আঘাত মিরাজের। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ১২ রান করা কারানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মিরাজ। এক বল বাদে শূন্য হাতেই ক্রিস ওকসকেও সাজঘরের পথ দেখান মিরাজ। বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে দুজনই স্ট্যাম্পিং হন লিটন দাসের হাতে।

এক ওভার বাদে নিজের শেষ ওভার করতে এসে আবারও লাল-সবুজের গ্যালারিকে উল্লাসে ভাসান মিরাজ। ১৭তম ওভারের শেষ বলে ক্রিজ জর্ডানকে ফেরান রনি তালুকদারের ক্যাচ বানিয়ে। ১০০ রানেই ৭ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের শেষ ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান মুস্তাফিজুর রহমানও।

শেষ ওভারের প্রথম বলেই ২৮ বলে ২৮ রান করা বেন ডাকেটটে ফেরান নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়ে। ওভারের চতুর্থ বলে রানআউট হয়ে ফেরেন ১১ বলে ১১ রান করা অভিষিক্ত রেহান আহমেদ।

ইনিংসের শেষ বলে এসে রান আউট হন জোফরা আর্চারও। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ১২ রানে ৪ উইকেট নেন মিরাজ। সাকিব, মুস্তাফিজ, তাসকিন ও হাসান মাহমুদ প্রত্যেকে একটি করে উইকেট লাভ করেন।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর