chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

লিটন দাসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি

খেলাধুলা ডেস্ক : আফগানিস্তানকে ৮৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সে সাথে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে টাইগাররা।

২০২৩ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এই ওয়ানডে সুপার লিগে ইতোমধ্যেই ১৪ ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। এ যাত্রায় মাঝ পথে এসে ৪ হারের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ১০ ম্যাচে। এর ফলে পয়েন্ট টেবিলের প্রথম দল হিসেবে ১০০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে টাইগাররা।

লিটন দাসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের পর বোলিং অ্যাটাকের সম্মিলিত সাফল্যে আফগানিস্তানকে ৪৫.১ ওভারে ২১৮ রানে অল আউট করে দেয় তামিম ইকবালের দল।

বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের জন্য ৩০৭ রানের বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আফগানিস্তান।

সরাসরি থ্রোতে দারুণ রান আউট করে ওপেনার রিয়াজ হাসানকে ব্যক্তিগত ১ রানেই সাজঘরে পথ দেখান প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের অসাধারণ জয়ের নায়ক আফিফ হোসেন।

এরপর আফগান অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শহিদিকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। আজমাতুল্লাহ ওমারজাই ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে সাকিব আল হাসানকে তুলে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে।

৩৪ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে সিরিজে ফিরে আসার লড়াইয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় হাসমাতুল্লাহ শহিদির দল। এরপর রাহমাত শাহ ও নাজিবুল্লাহ জাদরানের ব্যাটে ভালোই লড়ছিল আফগানরা। এই দুই ব্যাটারের জুটিতে ৯০ বলে আসে ৮৯ রান।

দ্রুত গতিতে রান তোলার এই ধারা ব্যাহত হয় দ্বিতীয় স্পেলে তাসকিন আহমেদ বোলিংয়ে এলে। প্রথমে ৭১ বলে ৫২ রান করা ওপেনার রাহমাত শাহকে সরাসরি বোল্ড করেন তাসকিন।

এরপর রান রেটের হিসেবে আফগানিস্তানকে ভালোভাবেই ম্যাচে ধরে রাখা নাজিবুল্লাহ জাদরানকে সাজঘরে ফেরান বাড়তি পেস ও বাউন্সের দারুণ এক ডেলিভারিতে।

মূলত ক্রিজে থিতু হয়ে যাওয়া এই দুই ব্যাটারের উইকেট নিয়েই ম্যাচে বাংলাদেশের আধিপত্য ফিরিয়ে আনেন তাসকিন। এরপর রাহমানুল্লাহ গুরবাজকে বোল্ড করে দ্বিতীয় উইকেট লাভ করেন সাকিব আল হাসান।

৩২ রান করা মোহাম্মদ নবিকে আউট করে আফগানদের কাজ আরও দুরূহ করে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর টেল এন্ডারদের লড়াই আর চলে বেশি সময়।

বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন ও সাকিব আল হাসান নেন দুটি করে উইকেট। এছাড়া মোস্তাফিজ, শরিফুল, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ নেন ১টি উইকেট।

এর আগে সাগরিকায় এসে আফগানিস্তানকে রানের বন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের সামনে ৩০৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রান। সাগরিকায় সকালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তামিম ইকবাল।

আফগান পেইসারদের সামলে শুরুটা ভালো করলেও জুটি বড় করতে পারেননি তামিম ও লিটন। তামিমের বিদায়ে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ২৪ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলে ফজলহক ফারুকির শিকার বনে মাঠ ছাড়তে হয় তামিমকে। স্কোরবোর্ডে সে সময় রান ৩৮।

তামিম ইকবালের বিদায়ের পর লিটন দাসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন সাকিব আল হাসান। খেলছিলেন দেখেশুনে। উইকেটে কাটিয়ে দেন ৯ ওভার। ৪৫ রানের জুটি গড়ার পর আউট হন সাকিব। ২০ রান করে রাশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি।

ফলে বাংলাদেশ হারায় তাদের দ্বিতীয় উইকেট। দলের রান তখন ৮৩। সেখান থেকে দলকে দেড় শ রান পার করিয়েছেন লিটন ও মুশফিকুর। গড়েছেন দ্বিশতরানের জুটি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি পূর্ণ করতে লিটন খেলেন ৬৫ বল। হাঁকান ৮টি ৪।

লিটনের পর ফিফটি তুলে নেন মুশফিকও। ক্যারিয়ারের ৪১তম ওডিআই ফিফটি করতে ৫৬ বল খেলেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটার। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার।

সেঞ্চুরি তুলে নিয়েই আফগানদের সামনে মারকুটে ভূমিকায় অবতীর্ণ হন লিটন। একের পর এক বাউন্ডারিতে একটু একটু করে আফগানদের চাপা দিতে থাকেন রান পাহাড়ে।

আফগানিস্তানের কোনো বোলার পাত্তা পাচ্ছিলেন না লিটন-মুশফিকের সামনে। একের পর এক বাউন্ডারিতে দুজনে মিলে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ২০২ রানের জুটি। এটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তৃতীয় উইকেট জুটি।

রেকর্ড গড়া সেই জুটি ভাঙে ১২৬ বলে ১৩৬ করে লিটনের বিদায়ের মধ্য দিয়ে। পার্টনারের বিদায়ের পর আউট হন মুশফিকও। যার ফলে লিটন সাজঘরে ফেরার পরের বলেই ৮৬ করে মাঠ ছাড়েন মুশফিক। ততক্ষণে রান পাহাড়ে পিষ্ট হয়ে গেছে আফগানিস্তান।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর