chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে সিপিবি’র ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রামে লাল পতাকার মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (০৬ মার্চ) সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও লাল পতাকার মিছিলের আয়োজন করা হয়।

সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল নবীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অশোক সাহা, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মছি উদ দৌলা, মোঃ জাহাঙ্গীর, উত্তম চৌধুরী, নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, অমৃত বড়ুয়া, জেলা কমিটির সদস্য রেখা চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য, দিলীপ নাথ, রাহাত উল্লাহ জাহিদ, আবু তাহের, শওকত আলী, সেহাব উদ্দিন সাইফু ও শিমুল ধর প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বিগত শতাব্দির বিশের দশকে ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ সিপিআই-এর দ্বিতীয় কংগ্রেসে পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা ভিন্ন একটি অধিবেশনে মিলিত হয়ে স্বতন্ত্রভাবে পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি এবং একই সঙ্গে পার্টির পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটির ৪র্থ সম্মেলনে পৃথক কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন পার্টি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি কার্যক্রম শুরু করে এবং ওই সম্মেলনকে প্রথম পার্টি কংগ্রেস হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কমিউনিস্ট কর্মীদের ওপর হত্যা, নির্যাতন, জেল-জুলুম-হুলিয়ার খড়গ নেমে আসে। হাজার হাজার কমিউনিস্টকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ড কমিউনিস্ট রাজবন্দীদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে ৭ জন কমরেড শহীদ হন। পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্টরা তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তেভাগা, নানকার, টংকসহ নানা কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগঠিত করেছেন। ঐতিহ্যবাহী গণসংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠার পেছনে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাই মুখ্য।

ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার-বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামাত-শিবির নিষিদ্ধের আন্দোলনসহ সকল আন্দোলন-সংগ্রামেই সিপিবি অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধেও সিপিবি সাহস ও দৃঢ়তার সাথে সংগ্রাম করে চলেছে।

বক্তারা আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকেন্দ্রিক দ্বি-দলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার কঠিন ও জটিল পথ পরিক্রমায় নানামুখী তৎপরতায় সিপিবি তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের সকল কাঠামো ভেঙ্গে ফেলেছে। স্বাধীনভাবে মানুষ মত প্রকাশ করতে পারছে না। লেখক, কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক, ছাত্রদের আজকে ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার করে জেলে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। সরকার সু-পরিকল্পিতভাবে বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাতের অন্ধকারে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দেশ আজকে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে, একদিকে ১ শতাংশ লুটেরা ধনিক শ্রেণি অন্যদিকে ৯৯ শতাংশ শ্রমিক, মেহনতি মানুষ।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মেহনতি জনতার সাথে ঐ লুটপাট-কারিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সম্মুখভাগে আছে। লড়াই ছাড়া কমিউনিস্ট পার্টির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব না।

শ্রমজীবী মানুষের লড়াই সংগ্রামের মধ্যেই কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম। ভাষা আন্দোলনসহ দীর্ঘদিনের গণসংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধে সিপিবি’র ভূমিকা বিশেষ মর্যাদার ও অনেক বিষয় মৌলিক প্রভাব সৃষ্টিকারী। সিপিবি বর্তমানে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারসহ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে।

দেশ ও জাতির কাঙ্ক্ষিত মুক্তির জন্য সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধনে সিপিবি কাজ করে যাচ্ছে।

এএমএস/চখ

এই বিভাগের আরও খবর