chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

পিবিআই প্রধানের শ্বশুর হিরেন্দ্র লাল মল্লিক মারা গেছেন

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজিপি) বনজ কুমার মজুমদারের শ্বশুর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিরেন্দ্র লাল (এইচ এল) মল্লিক অসুস্থতাজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সোমবার (১১ মার্চ) ভোররাত ৩টায় নগরীর ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সন্ধ্যায় নগরীর গোসাইলডাঙ্গা শ্মশানে প্রয়াতের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

মৃত্যুর সময় হিরেন্দ্র লাল মল্লিকের বয়স ছিল ৮৬ বছর। তিনি ৩ কন্যা, স্ত্রী আলপনা চৌধুরী সহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

হিরেন্দ্র লাল মল্লিকের জন্ম চট্টগ্রাম শহরের গোসাইলডাঙ্গায়। কৃতি ক্রীড়াবিদ হিসেবে তাঁর বেশ সুনাম রয়েছে। তিনি ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশেনের বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি চতুর্থ বাংলাদেশ গেমস-১৯৮৮ এ বিচারক হিসেবে এবং অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় আমন্ত্রিত অতিথি, কোচ, ম্যানেজারসহ তার উপর অর্পিত ভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৭১ সালে মার্চের শুরুতে তাকে নারায়ণগঞ্জে বদলি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পরিবার নিয়ে ভারতের আগরতলার ধর্মতলায় যান। কিছুদিন পর সেখান থেকে কলকাতার পার্কসার্কাস রোডে মুজিবনগর সরকারের দপ্তরে আসেন। সেখানে নতুন পুলিশ বিভাগে ফার্স্ট অফিসার আব্দুল খালেক স্বাক্ষরিত এক আদেশের মাধ্যমে তিনিসহ আরো কয়েকজন পুলিশ অফিসারকে স্টাফ অফিসার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। মুজিবনগর সরকারের দপ্তরে বিভিন্ন কাজে কিংবা রিপোর্ট করতে আসা ব্যক্তিদের সিকিউরিটি চেকআপ, জিজ্ঞাসাবাদ, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আচরণ যাচাইপূর্বক তাদেরকে নির্দিষ্ট ডেস্কে নিয়ে যাওয়ার কাজে নিয়োজিত ছিলেন হিরেন্দ্র লাল মল্লিক।

এছাড়া তিনি মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ গোপন দলিল বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ব্যক্তিবর্গের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের গোপন বার্তা নিয়ে আসতেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি একবার একটি গোপন বার্তা নিয়ে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ এর কাছে যান এবং বার্তা নিয়ে ফিরে আসেন। তিনি বর্ডার এলাকা থেকে গোপন তথ্য সংগ্রহের কাজেও নিয়োজিত ছিলেন। মুজিবনগর সরকারের নির্দেশে তিনি বিভিন্ন ক্যাম্প কমান্ডারের কাছে অর্থ পৌঁছে দেওয়ার কাজও করতেন। এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে তিনি যানবাহন হিসেবে বাস, ট্রেন ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মস্থলে ফিরে আসেন। তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে ১৯৯৫ সালে অবসরে যান।

 

মুন/চখ

এই বিভাগের আরও খবর