chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে অদৃশ্য বাজার সিন্ডিকেট

কদিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। রোজার প্রতিদিনই নিত্যপ্রয়োজনীয় আগেই প্রায় বাড়ছে পণ্যের দাম। যদিও রমজান উপলক্ষে অন্যান্য দেশে সবকিছুর দাম তুলনামূলক কমিয়ে দেওয়া হলেও এদেশে সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় রমজান আসার আগেই বাজারে মাছ, মাংস, মুরগি,মসলা ও সবজিসহ বেড়েছে প্রায় সবকিছুর দাম। সবমিলিয়ে বাজারে যেন বাড়তি দামের ছোঁয়া লেগেছে। অদৃশ্য সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। 

মোটাদাগে এখন বাজারে চিনি, ভোজ্যতেল, গরুর মাংস, মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল,খেসারি ডাল, ছোলা ও পেঁয়াজের দামে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে।

স্বস্তির খবর নেই কোনো বাজারেই। রোজায় দাম কমা নিয়েও শঙ্কায় ক্রেতারা। সেই পুরনো শব্দ। পুরনো আলোচনা। অদৃশ্য বাজার সিন্ডিকেট। রমজান এলে এই আলোচনা আরো জোরালো হয়। তাদের ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। শুধু পণ্যের দাম বাড়ে। সাধারণ মানুষের পকেট থেকে বেরিয়ে যায় কোটি কোটি টাকা। এতে মধ্যবিত্তের টিকে থাকার লড়াই করতে হয় সারা বছরই। প্রতি বছরই কোনো না কোনো পণ্যের ওপর ভর করে এই সন্ডিকেট। কখনো চিনি, কখনো তেল, কখনো ছোলা, কখনো খেজুর।

আজ রোববার চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি থেকে শুরু করে মাছের অতিরিক্ত বাড়তি দাম । গরুর মাংসের দাম বেড়ে ৮০০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি ব্রয়লারসহ সোনালি ও দেশি মুরগির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। বাজারে সব ধরনের মাছের দামও বাড়তি দেখা যাচ্ছে।

আজ কাজীর দেউরি কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়া, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, মূলা প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, ঝিঙে প্রতি কেজি ৭০ টাকা, পেঁয়াজের ফুল প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, আর প্রতি মুঠা হিসেবে নিলে প্রতি মুঠা ২০ টাকায়, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, ফুল কপি প্রতি পিস ৪০ টাকায়, আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, মটরশুঁটি প্রতি কেজি ৮০ টাকায়’, গাজর প্রতি কেজি ৪০ টাকায় ও শিমের বিচি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। আজকের বাজারে চাষের পাঙ্গাশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়, চাষের শিং মাছ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, চাষের কই প্রতি কেজি ৩০০ টাকায়, দেশি ছোট কই প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, পাবদা প্রতি কেজি মানভেদে ৫০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, শোল মাছ একটু বড় সাইজের প্রতি কেজি ১০০ টাকায়, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ টাকায়, কাতলা মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও টেংরা মাছ ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গে খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। গরুর মাংসের পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, সোনালি মুরগি ও কক মুরগিরও দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আন্দরকিল্লাহ থেকে বাজার করতে এসেছেন কলেজ শিক্ষিকা রাইসা সুলতানা রেশমী। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশে শুনেছি রমজান এলে সবকিছুর দাম কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ঘটে উল্টোটা। যেমন রমজান এলেই বেড়ে যায় সবকিছুর দাম। আজকে বাজারে সবজির দাম থেকে শুরু করে মাছ-মাংসসহ অন্যান্য প্রায় সবকিছুর দামই বাড়তি দেখলাম।

এদিকে, লবঙ্গের কেজিতে বেড়েছে ২০০ টাকা। এখন ১০০ গ্রাম লবঙ্গের দাম ২২০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এর দাম ছিল ২০০ টাকা। এই হিসেবে প্রতি কেজিতে লবঙ্গের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এছাড়া হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনিয়া, জিরা এগুলোর দামও ১০ থেকে ২০ টাকা প্রতি ১০০ বেড়েছে। হলুনের গুঁড়ার ছোট প্যাকেটের দাম ৫৫টাকা থেকে ১০টাকা বেড়ে হয়েছে ৬টাকা। মরিচের গুঁড়ার দাম ১০টাকা বেড়ে হয়েছে ১০০টাকা। গরুর মাংসের মসলা ২০টাকা থেকে ৫টাকা বেড়ে হয়েছে ২৫টাকা। মুরগির মাংসের মসলার প্যাকেট ১টাকা থেকে ২টাকা বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা।

অন্যদিকে, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, যা প্রতিনকেজি ১২০ টাকা। এখনো পেঁয়াজের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি বাজারে। এছাড়াও আদা-রসুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি ২০০টাকার নিচে আল বা রসুন কেনা যাচ্ছে না।

  • ফখ|চখ
এই বিভাগের আরও খবর