চট্টগ্রামে ডেঙ্গু কেড়ে নিল আরও একজনের প্রাণ, নতুন আক্রান্ত ১৩১
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে নতুন আক্রান্ত ১৩১ জন।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
চট্টগ্রামের বেসরকারি মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিবি আলমাস(৩৩) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি গত ২ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি হন এবং গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩১ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৭৯ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫২ জন রোগী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নতুন ভর্তি রয়েছে ৩৫ জন।
নগরীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৩১৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৫ হাজার ৯৪৯ জন। এ মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় গত আগস্টেই মিলেছে ১ হাজার ৯৯৭ রোগী। গত মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছিল ১ হাজার ৬৮৮ জন।
এ ছাড়া এবছর ডেঙ্গুতে ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত আগস্টে মারা গেছে ২৮ জন। জুলাই মাসেই মারা গেছেন ১৭ জন। জুন মাসে ৬ জন। জানুয়ারি মাসে ৩ জন।
সবচেয়ে বেশি মারা গেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩৪ জন মারা গেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ বেসরকারি হাসপাতালে।
এবছর এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ২৬৬ জন। গত আগস্ট মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছে ৩ হাজার ১১ জন।যা ২০২২ সালের আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছিল ১১৪ জন আর ২০২১ সালের ৩৯ জন।
আর গত জুলাই মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছে ২ হাজার ৩১১ জন।যা ২০২২ সালের জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মিলেছিল ৬৪ জন আর ২০২১ সালের মাত্র ৭ জন।
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ২ হাজার ৮৬৭ জন, নারী আক্রান্ত ১ হাজার ৭৮৫ জন এবং শিশু আক্রান্ত ১ হাজার ৬১৩ জন।
কিন্তু গত বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ৪৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ৪১ জনের মৃত্যু হয়। করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে বিশ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
তবে ডেঙ্গুতে এ বছর কত মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন বা প্রতি বছর কত মানুষ আক্রান্ত হন, তার সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যাই শুধু প্রকাশ করে। বাস্তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সবার আগে সচেতনতা প্রয়োজন। যেকোনো সময় ঘুমাতে গেলে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। কোনো লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
চখ/এআর