chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ‘জনস্বাস্থ্য সংকট’ ঘোষণার আহ্বান টিআইবির

দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাসমূহের সমন্বয়হীনতা, যথাযথ পরিকল্পনা, পূর্বপ্রস্তুতি ও কার্যকর বাস্তবায়নের ঘাটতির কারণে ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি দেশে চলমান ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে ‘জনস্বাস্থ্য সংকট’ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছে।

শনিবার (৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সিটি করপোরেশনগুলোর কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব, অনিয়ম, দুর্নীতি এবং বিক্ষিপ্তভাবে অকার্যকর কার্যক্রম গ্রহণের ফলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে, এ জাতীয় সতর্কবার্তা ছিল। কিন্তু রাজধানীতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ হতাশাজনক।

২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘‘ঢাকা শহরে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে প্রণীত ১৫ দফা সুপারিশ আবারও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের কাছে পাঠিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘জনস্বাস্থ্য সংকট’ ঘোষণা করে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত রোডম্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে মুনাফাভিত্তিক কীটনাশক নির্ভরতার ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্য সব ধরনের পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিত করে দুই সিটি করপোরেশনকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। কোভিড সংকটের অভিজ্ঞতার আলোকে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞজনকে সম্পৃক্ত করে পরামর্শক প্যানেল গঠন ও যথাযথ গুরুত্বসহকারে নিয়মিতভাবে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মশক নিধনে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতির ব্যবহার বাড়ানোসহ বছরব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সম্ভাব্য সব মাধ্যমে এডিশ মশা ও এর লার্ভা, ডেঙ্গুরোগ নিয়ন্ত্রণ ও দ্রুত চিকিৎসার বিষয়ে জনসচেতনতা ও সতর্কতামূলক বার্তার কার্যকর প্রচার বাড়ানো জরুরি। এছাড়া মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনসহ যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবীসহ আগ্রহী অন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করার সুযোগ নিতে হবে।

শুধু রাজধানীই নয়, সারাদেশেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে জানিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঢাকার বাইরের সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে মশক নিধনে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণে সক্ষমতার ঘাটতি জরুরি ভিত্তিতে চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণের সচেতনতা ও সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে বহুগুণ।

আগামীতে যেন এ জাতীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সে লক্ষ্যে উল্লিখিত বিশেষজ্ঞ প্যানেলসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে জাতীয় পর্যায়ে এডিশ মশাসহ অন্যান্য মশা নিয়ন্ত্রণে কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের পাশাপাশি বাস্তবায়নকারী সব সংস্থার দায়িত্ব ও কর্তব্য সুস্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

SY

এই বিভাগের আরও খবর