১০২ বার রক্ত দান করেছেন নাজমুল!
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস
মানবিকতার সবচেয়ে বড় নিদর্শন হলো স্বেচ্ছায় রক্তদান। সারা দেশে হাজার হাজার রক্ত দাতা রয়েছেন। তার মধ্যে মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। যিনি ৩৩ বছরে ১০২ বার সেচ্ছায় রক্ত দান করে যাচ্ছেন।
তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, আমি প্রায় ৩৩ বছর ধরে রক্ত দান করে যাচ্ছি। ৯৪ বার ‘ সন্ধানী’ হয়ে বাকি গুলো অন্য রক্তদান সংগঠনে হয়ে দিয়েছি। আমি মনে করি তরুণ প্রজন্মের এগিয়ে আসা উচিত। আমি নিজে একজন রক্তদাতা এবং ৩৩ বছর ধরে রক্তদান করে যাচ্ছি। আল্লাহর রহমতে কখনো কোনোরকম সমস্যা হয়নি। নিয়মিত রক্তদানে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না বরং নানা ধরনের রোগ থেকে বেচে থাকা যায়।তরুণরা যদি রক্তদানে উৎসাহিত হয়। তাহলে আমাদের এই রক্তের ঘাটতি খুব সহজেই পূরণ করতে পারবো।
‘সন্ধানী ’ সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম আরমান বলেন, মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম আমাদের সাথে দীর্ঘদিন সেচ্ছায় রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন। ৯৪ বার সন্ধানীর হয়ে রক্ত দান করেছেন। বিশ্ব রক্তদাতা দিবস উপলক্ষে নাজমুলকে নিয়ে একটু ডুকুমেন্টারি প্রকাশ করা হবে। আমরা চাই নাজমুলের মতো আরও অনেকে রক্ত দানের মতো মহৎ কাজে এগিয়ে আসবেন সবাই।
জানা গেছে, ‘সন্ধানী’ থেকে ২০২২ সালে ৩ হাজার ৫৬৬ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করা হয়। ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭৩ ব্যাগ সরবরাহ করা হয়। যেগুলো সব কটি চমেক হাসপাতালে রোগীদের দান করা হয়। চমেক হাসপাতাল ছাড়াও ২০২২ সালে ৫ শ জন এবং ২০২২ সালে দেড়শোর মতো রক্ত দান করা হয়েছে।
রক্তদান প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. গোলাম রাব্বানী চট্টলার খবরকে একজন সুস্থ শরীরের ব্যক্তি ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যেকোনো শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সক্ষম ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবেন। যাদের ওজন ৫০ কেজি বা তার বেশি (কখনো সর্বনিম্ন ওজন ৪৫ কেজিও ধরা হয়)। কোনো ব্যক্তি একবার রক্ত দেওয়ার ৪ মাস পর আবার রক্ত দিতে পারবেন। কিছু রক্ত রোগীর জন্য নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া কিছু ক্যান্সার রোগীরও রক্তের প্রয়োজন পড়ে। থ্যালাসেমিয়া রোগীর রক্তের প্রয়োজন বেশি পড়ে। মাসে দুএকবার করে রক্ত দিতে হয়। ধনী লোকদের জন্য নিকট আত্মীয়রা রক্তদাতা হিসাবে এগিয়ে আসলেও গরীবদের ক্ষেত্রে কম লোক এগিয়ে আসে। রক্তদাতা দিবসে আমরা উদ্বুদ্ধ করি, যেন শিক্ষিত লোকজন রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন। রক্তের অভাবে যেন কেউ মারা না যান।
তিনি আরও বলেন, সবাই রক্ত দিতে পারে না। যাদের অ্যাজমা, হেপাটাইটিস বি বা সি, জন্ডিস, এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়াসহ কয়েকটি রোগী আক্রান্ত রোগীরা রক্ত দান করতে পারে না। রক্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই দাতার রক্ত পরীক্ষা করে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, আজ ১৪ জুন। বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। ‘রক্ত দান করুন, দান করু প্লাজমা, যতবার সম্ভব গ্রহণ করুন জীবন বাঁচানোর এ অনন্য সুযোগ’ শিরোনামে দিবসটি দেশে পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে চমেক হাসপাতালে রক্ত দানের সংগঠন ‘সন্ধানী’ থেকে একটি র্যালীর আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান, চমেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার এবং অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
নচ/মআ/চখ