পটিয়ার সেই ‘গরীবের ডাক্তার’ করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেল
নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতালে নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এলাকায় তিনি ‘গরীবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (৭ জুন) চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম।
মৃত পল্লী চিকিৎসক চিত্তরঞ্জন দেবনাথ (৬৫) চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার সদরঘাট কালীবাড়ি এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। তার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলায়।
পটিয়া উপজেলার পাচুরিয়া গ্রামে তিনি পল্লী চিকিৎসক হিসেবে রোগীদের সেবা দিতেন।
আব্দুর রব জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে গত ৫ জুন তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শনিবার তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। রোববার সকাল ৭টায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার নমুনা প্রতিবেদন এখনো আসেনি।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ২৯ মে থেকে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। পরে শ্বাসকষ্ট ও আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিলে তাকে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
পটিয়া উপজেলা পাচুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাফকো কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজিম মুরাদ বলেন, প্রায় তিন যুগ ধরে পাচুরিয়া গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী চিত্তরঞ্জন দেবনাথ। গ্রামে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সব বয়সী মানুষের কাছে তিনি অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন। গরীব-অসহায় মানুষকে বিনা ফি’তে চিকিৎসা দিতেন। এজন্য এলাকার মানুষ তাকে গরীবের ডাক্তার হিসেবে সম্বোধন করতেন। উনি মানুষের কাছে এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে এলাকায় কোনো এমবিবিএস ডাক্তার চেম্বার খুললেও বেশিদিন থাকতে পারেননি।
কারণ, রোগীরা পল্লী চিকিৎসক চিত্তরঞ্জন দেবনাথকে বাদ দিয়ে এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে যেত না।
চিত্তরঞ্জন দেবনাথ মৃত্যুকালে স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন বলে নাজিম মুরাদ জানিয়েছেন।
এদিকে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে রোববার সকাল ৯টার দিকে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। ডা. আব্দুর রব জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তির বয়স ৫৫ বছর। বাসা নগরীর চান্দগাঁও এলাকায়। কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পর শনিবার (৬ জুন) তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এ নিয়ে ৯৮ জনের মৃত্যু হলো।