chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদন করবে চসিক

আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বর্জ্য থেকে সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা জানালেন চসিকের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) “চট্টগ্রাম নগরীতে সমন্বিত বর্জ্য শোধনের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা জানান।

অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র বলেন, বর্জ্য সংগ্রহের পর ল্যান্ডফিল্ডে নিয়ে বছরের পর বছর পচনের জন্য ফেলে রাখার নীতিতে আমি বিশ্বাসী নই। বিভিন্ন আধুনিক দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদন করা হচ্ছে। এই অভিজ্ঞতাকে চট্টগ্রামে কাজে লাগাতে চাই। প্রতিদিন চট্টগ্রামে উৎপাদিত বর্জ্য আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চাই। এর মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই শহরে পরিণত করা সম্ভব হবে।

সেমিনারে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বর্জ্য যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা না করলে, পরিবেশ অপরিচ্ছন্নের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গবেষণা ও প্রযুক্তি ভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করার সময়ে এসেছে।

অনুষ্ঠানে মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম আলাদাভাবে বর্জ্য পৃথক করার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি জানান, বর্জ্য  থেকে সার উৎপাদন ও রিসাইকেলযোগ্য বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নগরের শুলকবহর ওয়ার্ডে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান। এরপর নগরের পূর্ব ষোলশহর, পশ্চিম ষোলশহর এবং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে পৃথক আকারে কাজ চলছে বলেও উল্লেখ করেন।

সেমিনারে জাপানের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দুটি জাপানী কোম্পানি, জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এবং ইয়চিও ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন একটি সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরেন। সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন দৈনিক এক হাজার টন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে এর থেকে ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব করেছে। জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুসহ পরিবেশ সংক্রান্ত অনেকগুলো বড় বড় প্রকল্পে কাজ করছে। ইয়াচিও ইঞ্জিনিয়ারিং বাংলাদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে বহু বছর ধরে জাইকার সঙ্গে পরামর্শক হিসেবে সহযোগিতা করে আসছে। চসিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষার ফলাফল বাস্তবায়নের জন্য অভিপ্রায় পত্র জারি করেছে।

চসিকের সহযোগিতায়, জাপানি দলটি গেল বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর ‘একটি সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’বাস্তবায়নের প্রস্তাব তুলে ধরে। দলটি বিদ্যমান বর্জ্য শোধনাগারের যথাযথ ব্যবস্থাপনারও প্রস্তাব করেছে। সমীক্ষা অনুসারে, চট্টগ্রামের প্রতিদিন আনুমানিক ২ হাজর ১০০ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। যার ৬৮ শতাংশই খাদ্য সংশ্লিষ্ট।

সেমিনারের সঞ্চালনা করেন চসিক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। এসময় পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ-সভাপতি সুভাষ বড়ুয়া, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, তত্বধায়ক প্রকৌশলী আকবর আলী, জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি হারুনুর রশিদসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, জাপান বর্জ্য গবেষণা ফাউন্ডেশন করপোরেশনের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. নাওয়া সুকামোতো, জেএফই ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক জেন তাকাহাশি, ইয়চিও ইঞ্জিনিয়রিং এর মাসাহিরো সাইতো উপস্থিত ছিলেন।

 

আরকে/ সাআ / চখ

এই বিভাগের আরও খবর