chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

অগ্নিসন্ত্রাসের হুকুমদাতা বিএনপি নেতাদের বিচার ও রাজনীতি থেকে বিদায়ই আজ জনগণের দাবি : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনীতির নামে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যাকারীদের রাজনীতি থেকে বিদায় দেওয়া এবং অগ্নিসন্ত্রাসীদের সাথে তাদের হুকুম দাতাদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোই আজ দেশের মানুষের একদফা দাবি।

মন্ত্রী আজ দুপুরে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে ‘অগ্নি-সন্ত্রাসের আর্তনাদ’ সংগঠন আয়োজিত ‘বিএনপি-জামাত কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন, মানুষ পোড়ানো, অগ্নিসন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন’ শীর্ষক পোড়া মানুষের আহাজারিপূর্ণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে এই পোড়া মানুষগুলোর, জীবন্তদগ্ধ হয়ে মৃতদের স্বজনদের অসহনীয় জীবনের জন্য দায়ী বিএনপি-জামাতের নেতারা। বেগম খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের নির্দেশে এবং ফখরুল-রিজভী-আব্বাস-খন্দকার মোশাররফ সাহেব যারা বড়গলায় কথা বলেন, তাদের পরিচালনায় ও অর্থায়নে দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করা হয়েছে।’

অগ্নিসন্ত্রাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, ‘পাঁচ শতাধিক নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, পঞ্চাশ জনের বেশি পরিবহন চালক-শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে, তিন হাজারের বেশি মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে, সাড়ে তিন হাজার গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, বাসে-ট্রেনে-লঞ্চে আগুন দেয়া হয়েছে। তাদের এই প্রতিহিংসার আগুন থেকে পশুপাখি-গাছপালাও রক্ষা পায়নি।’

‘বিএনপি-জামাত তাই মানুষের শত্রু, পশুপাখির শত্রু, প্রকৃতির শত্রু, এরা অগ্নিসন্ত্রাসী, এরা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী’ বলেন হাছান মাহমুদ। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্দেশ্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘তারা আজ মানবাধিকারের কথা বলে অথচ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া এবং আজকের মির্জা ফখরুল সাহেবরাই বাংলাদেশে মানবাধিকারের চরম লংঘন ঘটিয়েছে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল এবং সেই ক্ষমতায় টিকে থাকতে শতশত সেনা অফিসার ও জওয়ানকে হত্যা করেছে, আওয়ামী লীগের ২২ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া, তারেক রহমান অবৈধ পথে ক্ষমতায় যাওয়ার লিপ্সায় হাজার হাজার মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হতাহত করেছে। এ সবই আমরা বিশ্ব অঙ্গনে নিয়ে যাব।’

এসময় পেট্রোলবোমায় চৌদ্দগ্রামে দগ্ধমৃত মোহাম্মদ ইউসুফের সন্তান জাহেদুল ইসলাম, গাজীপুর চৌরাস্তায় দগ্ধমৃত কাভার্ড ভ্যান চালকের বাবা মো: রমজান, শাহবাগে দগ্ধমৃত নাহিদের মা রুনি বেগম, ঠাকুরগাঁওয়ে অগ্নিদগ্ধ রফিকুল ইসলাম, রাজশাহীতে কর্মরত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ সাব ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর, যাত্রাবাড়ীতে সম্পূর্ণ মুখমন্ডল ও শরীর ঝলসে যাওয়া সালাহউদ্দিন ভূঁইয়াসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পেট্রোলবোমার শিকার ও তাদের স্বজনরা বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের বিলাপ ও আহাজারিতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

‘অগ্নি-সন্ত্রাসের আর্তনাদ’ আহবায়ক শাহাদাত হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. মুহাম্মদ সামাদ, ব্যারিস্টার সাঈদুল হক সুমন, মোটরচালক শ্রমিক লীগ নেতা আলী হোসেন, সংস্কৃতিব্যক্তিত্ব অরুণ সরকার রানা, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম রাসেল প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা বলেন, ‘মানুষ আর অগ্নিসন্ত্রাস চায় না। রাজাকার-আলবদর নিয়ে জাতীয় সরকার করতে চাওয়া বিএনপিকে শুধু প্রতিহত করলেই হবে না, দেশের রাজনীতি থেকে তাদেরকে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর