chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

লন্ডন ও বেইজিংয়ের সম্পর্কের সোনালি যুগ এখন অতীত : ঋষি সুনাক

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, চীনের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্কের ‘তথাকথিত’ সোনালি যুগ এখন শেষ হয়ে গেছে। চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক নতুন করে বিবেচনা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম বৈদেশিক নীতি বিষয়ক বক্তৃতায় ঋষি সুনাক বলেছেন, আগের দশকে দুই দেশের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কে জটিলতা ছিল না। কিন্তু এখন কঠোর বাস্তবতা মাথায় রেখে প্রতিযোগীদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।

কিন্তু তিনি ‘স্নায়ু যুদ্ধ থিওরি’র বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বিশ্ব চীনের যে প্রভাব তৈরি হয়েছে, তা অবজ্ঞা করা ঠিক হবে না।

 

গত মাসে যুক্তরাজ্যের টোরি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দলের পেছনের সারির নেতারা চাপ দিচ্ছিলেন যেন চীনের প্রতি যুক্তরাজ্যের নীতি কঠোর করে তোলা হয়।

লন্ডনের লর্ড মেয়রস ব্যাংকুয়েট হলে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের এই বক্তব্য এমন সময় এলো যখন চীনে কয়েক দিন ধরেই কঠোর কভিড আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। সেখানে অনেক মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও সাংহাইয়ে বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করার সময় বিবিসির একজন সাংবাদিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাকে মারধর করা হয়, লাথি মারা হয়। এরপর কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয় তাকে।

ব্যাবসায়িক নেতা ও বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানে ঋষি সুনাক বলেছেন, বিক্ষোভ দমাতে চীন আরো কঠোর পদ্ধতি বেছে নিয়েছে, যার মধ্যে বিবিসির সাংবাদিককে নিগৃহীত করার মতো ঘটনাও রয়েছে।

তিনি বলেছেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের সোনালি যুগ এখন অতীত, কারণ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বাড়লে সে দেশে রাজনৈতিক সংস্কার হবে বলে যে চিন্তা করা হতো, তা আসলে ঠিক নয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সময় চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ককে সোনালি যুগ বলে বর্ণনা করা হতো। কিন্তু লন্ডন ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক তার পর থেকে অনেক অবনতি হয়েছে।

তবে সুনাক আরো বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অথবা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ইস্যুগুলোতে চীনের প্রভাব আমরা এড়িয়ে যেতে পারব না। ’

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের মতো মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে মিলে যুক্তরাজ্য কূটনীতি ও বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় কাজ করবে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

ইউক্রেন ইস্যুতে সাহায্য অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুনাক বলেছেন, যত দিন দরকার হবে, তত দিন ইউক্রেনের পাশে থাকবে যুক্তরাজ্য। সামনের বছর ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা আরো বাড়ানো হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম বিদেশ সফর ছিল ইউক্রেনে, যেখানে তিনি আরো বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র, রাডার ও ইউক্রেনের সামরিক সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা