chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

একাকিত্ব ঘুচাতে সন্তানরা বিয়ে দিলো বৃদ্ধ মাকে

পাঁচ বছর আগে স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল। আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। স্ত্রী নাদিরা বেগমের বয়স ৫৩। তাঁর দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও মারিয়াম জ্বীম।

স্বামী মারা যাওয়ার পরে কষ্ট করে সংসার চালাতেন স্ত্রী।

জানা গেছে, তাঁর স্বামী মোহাম্মদ রুহুল আমিন আত্মহত্যা করেছিলেন। অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন নাদিরা। বিয়ের পরে বড় বোন তাঁর ছোট বোনকে নিজের কাছে রেখেছিলেন। এতে একা হয়ে গিয়েছিলেন নাদিরা। সারা জীবন মা একা থাকবেন কী করে? তাই মায়ের বিয়ে দিলেন মেয়েরা।

তাঁদের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাচ্ছে নেটিজেনরা। দুই মাস ধরে দুই মেয়ে নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন পাত্র খোঁজার ভার। মেয়েরাই হয়ে উঠেছিলেন মা। দুই মাস পরে ৬২ বছর বয়সী মোহাম্মদ হান্নান খানের সঙ্গে তাঁরা বিয়ে দিলেন মায়ের। দুই বোনের পাশে থেকেছেন বড় বোনের স্বামী মাহমুদুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, নবদম্পতি মিরপুরে গিয়ে নতুন সংসার পেতেছেন।

শাশুড়ির বিয়েতে বড় জামাই নিয়েছিলেন ‘উকিল বাবা’র ভূমিকা। দুই মেয়ে এবং বড় জামাই মায়ের স্বামীকে জড়িয়ে ধরে ‘আব্বু’ বলেই আপন করে নিয়েছেন। আর জামাই যেহেতু উকিল বাবা তাই নবদম্পতি মেয়ে ও জামাইকে সম্বোধন করেছেন, আব্বু ও আম্মু বলেই।

মায়ের বিয়ে দেওয়ার পরে বড় মেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মায়ের বিয়ে দিলাম’। আর নবদম্পতি আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছেন জীবনসঙ্গী। বন্ধু। নতুন সংসারের বয়স মাত্র এক সপ্তাহ। অনেকেই ভার্চুয়াল জগতে ‘আক্রমণ’ করেছেন তাঁদের।

তা নিয়ে দুই মেয়ে বলেন, ‘সমাজ এগালেও আজও অনেক মানুষ উদার হতে পারেননি। গোঁড়ামির অন্ধকারে আটকে রয়েছেন তাঁরা। তবে তাতে কিছুই এসে-যায় না। ’ তাঁরা বলেন, জীবনে সৎ উদ্দেশ্যটাই আসল।

যেখানে মায়ের নতুন বিয়ে দিয়েছেন তাঁরা, সেখানে দেয়ালে দুই বোন লিখেছেন, ‘জটিল করলে জটিল হবে। সহজ করলে সহজ হবে’। এই দুই ‘সাহসী কন্যা’কে কুর্নিশ জানাচ্ছে নেট দুনিয়ার বহু নাগরিক।

নাদিরা বেগমের স্বামীকে পছন্দ, তিনি নেশা করেন না, তাঁর মাথা গরম নয় বলে। আর হান্নানের তাঁর স্ত্রীকে পছন্দ, তিনি অকপট কথা বলেন বলে।