chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

সুদ মওকুফ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : নিয়ম বহির্ভূতভাবে সুদ মওকুফ না করতে দেশের সব ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন গ্রাহকের সুদ প্রায়ই মওকুফ করে দিচ্ছে।

এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সুদ মওকুফ সংক্রান্ত একটি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা নির্দেশনায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে।

ব্যাংকগুলো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ঋণের সুদ মওকুফ করতে পারে যেমন, ঋণগ্রহীতার মৃত্যু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, মড়ক, নদীভাঙন, দুর্দশাজনিত কারণে বা বন্ধ প্রকল্পের ব্যাংকঋণের সুদের সম্পূর্ণ অংশ বা অংশবিশেষ মওকুফ করে দিতে পারে।

তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, এসব বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন গ্রাহকের সুদ প্রায়ই মওকুফ করে দিচ্ছে।

এতে সুদ মওকুফ সুবিধা পাওয়ার জন্য গ্রাহকদের মধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে অনাগ্রহ সৃষ্টি হতে পারে, যা ব্যাংক খাতে সার্বিক ঋণ শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

এ জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, সামগ্রিক ঋণশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও গ্রাহকস্বার্থ সংরক্ষণে ব্যাংক খাতে ঋণের (ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগ) আরোপিত, অনারোপিত সহ সব ধরনের সুদ (ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে মুনাফা) মওকুফের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। তবে আগের সুদ মওকুফ সুবিধা নেয়া গ্রুপের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মূল ঋণ (আসল) মওকুফ করা যাবে না। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না।

ব্যাংকের আয় বিকলন করে সুদ মওকুফ করা যাবে না। ঋণের সুদ মওকুফ সুবিধা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।

তবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল ঋণের সুদ মওকুফসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পণ করা যাবে। পাশাপাশি সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকের তহবিল ব্যয় আদায় নিশ্চিত করতে হবে।

তবে তহবিল ব্যয় আদায়সংক্রান্ত শর্ত কোন কোন ক্ষেত্রে শিথিল করা যেতে পারে, তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এমন প্রকল্প, ঋণের জামানত, সহজামানত, প্রকল্প সম্পত্তি ও প্রকল্প উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ বিক্রি থেকেও তহবিল ব্যয় আদায় করা সম্ভবপর না হলে পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে আইনগত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরও পাওনা আদায় করা না গেলে এবং ঋণগ্রহীতার মৃত্যু অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, মড়ক, নদীভাঙন বা দুর্দশাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা যৌক্তিক কারণে ঋণ পরিশোধে অপারগ হলে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, সুদ মওকুফ করা হলে ব্যাংকের নিজস্ব আর্থিক অবস্থার ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা পর্যালোচনা করতে হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলো নিজস্ব মূলধন পর্যাপ্ততা, মুনাফাসহ অন্যান্য আর্থিক সূচক বিবেচনায় নিতে হবে।

অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এবং তার পরিবারের সদস্য বা পরিচালকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর