chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

‘দেশে প্রতি ১০ জন নবজাতকের মধ্যে ১ জন অপরিণত জন্মগ্রহণ করে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিচ্ছেদ নয়, দ্রুত ব্যবস্থা নিন, অপরিণত নবজাতককে খুব দ্রুত বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে আনুন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ইমপেরিয়াল হাসপাতালে ওয়ার্ল্ড প্রিম্যাচিউরিটি ডে পালিত হয়েছে। অপরিণত শিশুদের সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, এর প্রতিকার ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাতে ২০০৮ সালে রোম ডিক্লারেশনের মাধ্যমে পূর্ণতা পায় দিবসটি। বিশ্বব্যাপী সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ইমপেরিয়াল হাসপাতাল দিবসটি উদযাপন করে।

আজ বুধবার (১৭ নভেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে ইমপেরিয়াল হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগ এবং প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের উদ্যোগে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে সেমিনারে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, করোনার কারণে ইমপেরিয়াল হাসপাতালের অগ্রগতি কিছুটা ব্যহত হলেও আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের প্রয়োজনের তূলনায় গুনগত মান সম্পন্ন চিকিৎসার প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। এই উপলদ্ধিকে সামনে রেখে ইমপেরিয়াল হাসপাতাল অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু রোগ বিভাগ স্থাপন করেছে। উক্ত বিভাগে ৪০ জনের টিমে প্রশিক্ষিত ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। এই ইউনিটে প্রি-মেচিউর (ওজন-৭০০-১০০০ গ্রাম), নবজাতকদের জন্য ১২টি আলাদা শয্যাসহ ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার বা কেএমসি রয়েছে। বাংলাদেশে এই প্রথম নবজাতকদের জন্য ডেডিকেটেড এ্যাম্বুলেন্স-যেখানে ডেডিকেটেড মেডিকেল টিম ডাক্তার, নার্স, ভেন্টিলেটর সহ প্রয়োজনীয় লাইফ সাপোর্টের ব্যবস্থা আছে। এই পর্যন্ত ২০০ এর অধিক এই ধরণের প্রি-মেচিউর শিশুদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এই ইউনিটে ‘‘নিউবর্ণ স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে জন্মগত ত্রুটি ও রোগ যেমন- হৃদযন্ত্র, হরমোন, হারজোড়া, চোখ, কানের জন্মগত ত্রুটি, নির্ণয়ের ব্যবস্থা রয়েছে, যা চট্টগ্রামে এখনো পর্যন্ত ইমপেরিয়াল হাসপাতালই করে থাকে।

তিনি আরো বলেন, অপরিনত নবজাতকের চোখের রেটিনার রক্তনালী অপরিনত থাকায়, অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি প্রি-মেচিউর নবজাতকের চিকিৎসায় অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত অক্সিজেন থেরাপী দিলেও চোখের রেটিনার রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বাচ্চা অন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই অপরিনত নবজাতককে যত দ্রুত সম্ভব উন্নত ব্যবস্থা সম্বলিত হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য তিনি আহবান জানান।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা বদরুল আলম। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমপেরিয়াল হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা ফয়সল আহমদ। নির্ধারিত বিষয়ের উপর আরো প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ডা উৎপল চৌধুরী, ডা. মো আনোয়ার হোসেন, ডা. এটিএম মাহমুদুর রহমান, ডা. দিল আনজিজ বেগম। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের নিওনেটোলজী বিভাগের প্রধান আধ্যাপক ডা.ওয়াজীর আহমেদ, ইমপেরিয়াল হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের সিনিয়র কন্সাল্টেন্ট অধ্যাপক ডা রাশেদা সামাদ, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগের সিনিয়র কন্সাল্টেন্ট ডা. শিরিন ফাতেমা, ও শিশু রোগ বিভাগের কন্সাল্টেন্ট ডা.উৎপল চৌধুরী।

সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা ইমপেরিয়াল হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগ এবং প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগ এর সর্বাধুনিক বিশ্বমানের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও অপরিণত নবজাতকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ইনফেক্সান প্রতিরোধী ব্যবস্থার প্রশংসা করেন ও উল্লেখ করেন চট্টগ্রামে এই রকম উচ্চ মানের চিকিৎসা ব্যবস্থায় ইমপেরিয়াল অনন্য। অনুষ্ঠানে সমাপনি বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. তারেক আল নাসির।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্টাফবন্দের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর