নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামবাসী না চাইলে সেখানে হাসপাতাল প্রকল্প হবে না। সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্প রেল মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেনি। এটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পিপিপি অথরিটির প্রকল্প। বিনিয়োগও বেসরকারি। সুতরাং রেল মন্ত্রণালয়ের এখানে করার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
সোমবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম রেল ভবনে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ সময় রেলমন্ত্রীর কাছে সিআরবির হাসপাতাল প্রকল্পের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রামের সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘২০০৯ সালের গেজেট অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুমোদিত সরকার ঘোষিত হেরিটেজ জোন সিআরবি। এখানে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা হতে পারে না, আইনত নিষিদ্ধ। সিআরবিতে চাকসু জিএস শহিদ আবদুর রবসহ নয় শহিদের কবর আছে। এখানে কোনো স্থাপনা হলে তাদের কবর ধ্বংস হবে।’
নাগরিক সমাজ হাসপাতালের বিপক্ষে নয়, তবে সিআরবির বাইরে অন্যত্র হাসপাতাল চায়— রেলমন্ত্রীকে এমন অবস্থানের কথা জানান ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল।
এ সময় রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে হাসপাতাল করতে হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে নকশা অনুমোদন করতে হবে। সিডিএ যদি নকশা না দেয়, সেখানে হাসপাতাল হবে কীভাবে। সবচেয়ে বড় কথা- মন্ত্রণালয়ের এখানে করার কিছু নেই।’
নাগরিক সমাজের দেওয়া তথ্য-উপাত্ত ও বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীকে জানানোর আশ্বাস দিয়ে রেলমন্ত্রী তাদের বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে আমার অভিমত হচ্ছে, আইন ও চট্টগ্রামবাসীর সেন্টিমেন্টের বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না। আমরা যা কিছু করছি জনগণের কল্যাণে। জনগণের কল্যাণে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে।’
মতবিনিময়ের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রামের কো-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, জাসদ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহজাজান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান ও প্রণব চৌধুরী।
উল্লেখ্য, গত বছর সিআরবি এলাকায় বর্তমান রেলওয়ে হাসপাতাল ও সংলগ্ন খালি জমি, রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনি স্টাফ কোয়ার্টারের ছয় একর জমিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) প্রকল্পের চুক্তি সই ও অনুমোদন হয়। বেসরকারি ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান ছয় একর জমিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল, ১০০ আসনের মেডিক্যাল কলেজ ও ৫০ আসনের নার্সিং ইনস্টিটিউট করতে চায়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয় ১২ বছর। ইতিমধ্যে রেলওয়েকে আট কোটি টাকা পরিশোধ করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি। ৫০ বছর পর হাসপাতালটি রেলওয়েকে হস্তান্তর করা হবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়।
সিআরবিতে বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামে নগরবাসী।
নচ/চখ