ফারুকী ও মহেশ ভাটকে লিগ্যাল নোটিশ
হলি আর্টিসান নিয়ে সিনেমা নির্মাণ
হলি আর্টিসান হামলার ঘটনা নিয়ে কোনো প্রকার চলচ্চিত্র, প্রামাণ্যচিত্র বা নাটক নির্মাণ না করতে ভারতীয় চলচ্চিত্রকার মহেশ ভাট ও বাংলাদেশের নির্মাতা মােস্তফা সরয়ার ফারুকীকে লিগ্যাল নােটিশ পাঠানো হয়েছে। ল’ ফার্ম ‘লিগ্যাল কাউন্সিল’ এই নোটিশ পাঠিয়েছে।
গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এই নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ‘লিগ্যাল কাউন্সিল’ এর ব্যারিস্টার মিতি সানজানা এবং ব্যারিস্টার ওমর এইচ খান। তাদের প্রতিষ্ঠান ‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’র পক্ষ থেকে এই নোটিশ দিয়েছে।
এ বিষয়ে আলাপকালে ‘লিগ্যাল কাউন্সিল’ এর ব্যারিস্টার মিটি সানজানা বলেন, ‘আমরা এই নোটিশটি পাঠিয়েছি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীসহ শনিবার বিকেল সিনেমার বাংলাদেশি প্রযোজক জাজ মাল্টিমিডিয়া ও জার্মানের প্রযোজক টেন্ডেম প্রডাকশনকে। সেইসঙ্গে ভারতের তিন চলচ্চিত্রকার মহেশ ভাট, অগ্নিদেব চ্যাটার্জি, ও গুলপানাংকেও নোটিশ দিয়েছি।
তাদের মধ্যে গুলপানাক জবাব দিয়েছেন নোটিশ পেয়েই। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন যে হোলি আর্টিসান নিয়ে কোনোরূপ নির্মাণ থেকে বিরত থাকবেন। আশা করছি বাকিরাও বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’
এদিকে ব্যারিস্টার ওমর এইচ খান বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটে গেছে ২০১৬ সালে তা মর্মান্তিক। প্রিয়জন হারিয়েছেন যারা তাদের জন্য এটা অপূরণীয় ক্ষতি। তাই তাদের বিরক্ত করে বা শুকাতে যাওয়া শোকের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়াটা অমানবিক। সেইসঙ্গে এই ঘটনা নিয়ে কোনো রকম চলচ্চিত্র প্রকাশ হলে সেটি আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। তাই হলি আর্টিসানে হামলা নিয়ে কোনো রকম নির্মাণ না করার জন্য অনুরোধ করছি আমরা।’
এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, ‘মিসেস রুবা আহমেদ গত ১লা জুলাই ২০১৬ এর হলি আর্টিসানের মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় তার একমাত্র সন্তান মরহুমা অবিন্তা কবিরকে হারিয়েছেন। অবিন্তার মর্মান্তিক মৃত্যুর পর কয়েকজন নির্দেশক/প্রযোজক মিসেস রুবা আহমেদের সাথে যোগাযোগ করে হোলি আর্টিসানের কাহিনীভিত্তিক চলচিত্র নির্মাণের প্রস্তাব দেন। মিসেস রুবা আহমেদে সেসকল নির্দেশককে স্পষ্টভাবে তার তীব্র আপত্তিজ্ঞাপন করেন।
অবিন্তা কবির ছিলেন তাদের একমাত্র সন্তান এবং তার বেদনাদায়ক মৃত্যু তার পরিবারের সদস্যদের জীবনকে নিদারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে এবং তারা প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে দিন যাপন করছেন। সকলের কাছে যা কেবল একটি নির্মম হত্যাকান্ড, তা অবিন্তার মা এবং তার পরিবারের জন্য এক চরম দুর্ভাগ্য এবং নির্মম সত্য, যা তারা প্রতিনিয়ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে বয়ে চলেছেন।’
সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘হলি আর্টিসানকে কেন্দ্র করে কোনোরূপ মিডিয়া নির্মাণের মাধ্যমে সেসকল ঘটনা আবার জনগণের মাঝে প্রচার করলে, তা কেবল সেই দুর্ঘটনার করুণ এবং কষ্টদায়ক স্মৃতিগুলােকেই আবার জাগিয়ে তুলবে, যা অবিন্তার মা এবং তার পরিবার প্রতিনিয়ত ভুলে থাকার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অতএব, সকল সম্মানিত প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা, কলাকুশলী, মিডিয়া সংস্থা, মিডিয়া বিতরণকারী সংস্থা, লেখক, ক্লিপ-লেখকগণকে হোলি আর্টিসান ঘটনাকে তুলে ধরে বা এমন কোনো চরিত্রকে বর্ণনা করে যার সাথে অবিন্তা কবিরের প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ সাদৃশ্যতা রয়েছে, সেই রুপ যেকোনো প্রকার পূর্ণ বা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, টেলিফিল্ম, নাটক, নাটিকা, উপন্যাস, গল্প, ইত্যাদির রচনা, প্রযোজনা, পরিচালনা, বিতরণ, বিপণন, উপস্থাপন, প্রকাশনা, অভিনয় ইত্যাদি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তা সত্ত্বেও যদি কেউ এমন কোন কাজে লিপ্ত হন, তাহলে সকল লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
সূত্র: জাগো নিউজ