chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রাম বিভাগে শঙ্কা বাড়াচ্ছে বজ্রপাতে মৃত্যু

একদিনে ১০ মৃত্যু

প্রতি বছর বজ্রপাতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু বজ্রপাত প্রতিরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। বস্ত্রপাতে গত বছরে গড়ে ৩২০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বড় গাছ কেটে ফেলায় মৃত্যু বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

গত ২ মে একদিনেই চট্টগ্রাম বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এ দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কুমিল্লা, রাঙামাটি, কক্সবাজার ও কুমিল্লায় বৃষ্টির সময়ে হওয়া বজ্রপাতে মোট ১০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, রাঙ্গামটিতে ৩ জন, কক্সবাজারে ২ জন,খাগড়াছড়িতে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল হাটহাজারিতে বজ্রপাতে মারা গেছে এক কৃষকের লাখ টাকার গরু।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আবহাওয়ার ধরন বদলে যাওয়া,
বজ্রপাত বেড়ে যাওয়া, বড় গাছ কেটে ফেলার কারণে
বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ছে। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও পর্যাপ্ত উদোগ নিয়ে এই মৃত্যু প্রতিরোধ করা সব বলছেন তাঁরা।

তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের আকাশসীমায় বছরে যে প্রায় লাখ ৮৬ হাজার বজ্রপাত সংঘটিত হচ্ছে সেটা
আমাদের জন্য যথেষ্ট চিন্তার কারণ। বজ্রপাতের সংখ্যা বাড়ছে বিধায় মানুষ মারা যাচ্ছে বেশি।

একদিনে ১০ জনের মৃত্যু 

গত ২ মে চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এলেও বজ্রপাতে কুমিল্লা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে তাঁদের মৃত্যু হয়।

কুমিল্লা জেলায় সবচেয়ে বেশি চার জনের প্রাণহানি হয়েছে।
কুমিল্লায় জেলার চার উপজেলায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং ও দেবিদ্বার উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে এসব প্রাণহানি হয়েছে।

নিহতরা হলেন- চান্দিনার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে দৌলতুর রহমান (৪৭), সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ার ইউনিয়নের উত্তর সূর্যনগর গ্রামের আতিকুল ইসলাম (৫০), দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামের মোখলেছুর রহমান (৫৮) ও বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাচোরা গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে আলম হোসেন।

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার পৃথক স্থানে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন– উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের লংথিয়ান পাড়া এলাকায় তনিবালা ত্রিপুরা (৩৭) ও রুপকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক এলাকায় বাহারজান (৫৫)। এ ছাড়া রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির সিলেটি পাড়ায় বজ্রপাতে মো. নজির (৫০) এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজারের পেকুয়ায় লবণ মাঠে বজ্রপাতে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। বৃষ্টি আসায় মাঠে থাকা লবণ তুলতে গিয়ে মগনামার রাজাখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন– দিদারুল ইসলাম (২৯) ও মোহাম্মদ আরফাত (২২)। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় বৃষ্টিপাতের সময় বজ্রপাতে ইয়াছিন আরাফাত নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দিকে মাটিরাঙ্গার বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়নাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞের মতে, বজ্রপাতে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ বড় গাছ কেটে ফেলা। যারা বজ্রপাতে আহত হচ্ছে, তাদের চিকিৎসার জন্য কোনো প্রটোকল নেই। বজ্রপাতে আহত কাউকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কী চিকিৎসা দেওয়া হবে, এর কোনো প্রটোকল নেই। তৎক্ষণাৎ উপসর্গ দেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বজ্রপাতে যারা মারা যান, তাদের বেশিরভাগ দরিদ্র মানুষ। সেজন্য এই বিষয়ে নিয়ে আমাদের কোনো চিন্তা নেই। এটাকে দুর্যোগের তালিকার মধ্যে নেওয়া হয়েছে। মরে গেলে দাফনের জন্য অর্থ দেওয়া হয়। ব্যস কাজ শেষ।

  • ফখ|চখ
এই বিভাগের আরও খবর