chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

রহমত,নাজাত ও মুক্তির সওগাতের রমজান

বছর ঘুরে আবার এলো এ মাস। সিয়াম সাধনার মাস এলো মানব জাতির-ইহ-পরকালীন কল্যাণের অফুরান সুযোগ নিয়ে। এলো রহমতের বার্তা, নাজাতের পয়গাম আর মুক্তির সওগাত নিয়ে।

দয়ালু ও দাতা মহান স্রষ্টার দানের আকাশ চির অবারিত। দয়ার সাগর সদা তরঙ্গায়িত। তবে রমজানে তাঁর দয়ার সাগরে জোয়ার ওঠে। অঝোর অবিরাম ধারায় নামে দানের বৃষ্টি। এ মাসটির জন্য তাই মহানবী (সা.) অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। বেশ আগে থেকেই রমজানের সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগানোর পস্তুতি নিতেন।

তিনি রমজানের দুমাস আগে থেকেই এর জন্য দোয়া করতেন। মাসটি পেতে মহানবী (সা.) শুধু দোয়াই করতেন না, এর পূর্ববর্তী মাস প্রায় শাবানজুড়ে রোজার মাধ্যমে এতে সিয়াম সাধনার অনুশীলন করতেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর যখন এ মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হয়, এর আগমনে সাড়া পড়ে যায় জমিনে আসমানে! আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায় নিখিল সৃষ্টিতে!

আল্লাহর হাবিবের ভাষায়— “যখন রমজানের প্রথম রাত আগমন করে শয়তান এবং অবাধ্য জিনদের শৃঙ্খলিত করা হয়। জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়; কোনো দ্বার খোলা রাখা হয় না। জান্নাতের দুয়ারগুলো অর্গল মুক্ত করে দেয়া হয়; কোনোটাই কপাটবদ্ধ রাখা হয় না।

এদিকে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন, ‘হে পুণ্যের অনুগামী, অগ্রসর হও। হে মন্দ- পথযাত্রী থেমে যাও’। তথাপি বহু ব্যক্তিকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আর এমনটি করা হয় রমজানের প্রতি রাতেই’। (তিরমিজি : ৬৮২)।

এ মাস সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, রমজান ওই মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য
হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।

কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক মাসটি পাবে, সে এর রোজা রাখবে আর যে অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায়
থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ (রোজার কাজা আদায়) করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য কঠিন চান না।’ (সূরা বাকারা : ১৮৩)।

রমজানের শুভ আগমন ক্ষণে মহানবী (সা.) সাহাবিদের সুসংবাদ প্রদান করতেন। তাদের শোনাতেন রমজানের মর্যাদা ও মাহাত্ম্যের কথা। তারা যেন রমজানে ইবাদত-বন্দেগিতে বেশি করে আত্মনিয়োগ করতে পারেন। নেকি অর্জনে অতিরিক্ত মেহনতের সংকল্প করেন । আমাদের কর্তব্যও তাই। মহা সৌভাগ্যের রমজান লাভ করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। এ পৃথিবীর অনেক মানুষ এ রমজান পাওয়ার আশায় প্রতীক্ষার প্রহর গুনছিলেন, অথচ মৃত্যু নামক দেয়াল এসে তাদের সে স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা সেই দলে না হয়ে সৌভাগ্যের সুযোগ পাওয়া দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। তাই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।
এখন আমাদের দায়িত্ব হবে রমজানের সুযোগটিকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো। এ রমজানকে জীবনের শ্রেষ্ঠ রমজান বানানোর জন্য সর্বাত্মক সাধনায় আত্মনিয়োগ করা।

  • ফখ|চখ
এই বিভাগের আরও খবর