chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শঙ্কা নিয়ে চট্টগ্রামে এবারও বসছে ৭ পশুর হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক : চরম শঙ্কার মধ্যে অবশেষে চট্টগ্রাম নগরীতে বসছে কোরবানির পশুর হাট। ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোরবানির পশুর হাটের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের পক্ষ থেকেও কয়েকটি হাট না বসানোর আপত্তি জানানো হয়েছিল। কিন্তু পশুর হাটগুলো বসছেই।

লোকজন মনে করছেন, বাড়তি পশুর হাট বাড়বে করোনা আক্রান্তের বাড়তি ঝুঁকি। চট্টগ্রামে গত কয়েকদিনের করোনায় মৃত্যুহীন দিনের সুখবর হয়তো আর মিলবে না এমনও শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। তবে সব দাবি শঙ্কা আর মতামত উপেক্ষা করে চসিক পশুর হাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

চসিকের কর্মকর্তারা বলছেন, সিএমপি আপত্তি করেছে এমন স্থানে হাট বসছে না। আপাতত চারটি হাট আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি হাট আয়োজনের সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থায়ী-অস্থায়ী দুই ধরনের পশুর হাটই বসছে এবার। সবগুলো মিলে পশুর হাটের সংখ্যা সাতটির কম হবে না। তবে পশুর হাটে সংক্রমণ রোধে কিছু নির্দেশনা মেনে চলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব নির্দেশনা মেনে চললে হয়তো সংক্রমণ ঝুঁকি তেমন থাকবে না।

এদিকে পশুর হাট বসানোর ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সিদ্ধান্ত নিলেও এখনও জেলা প্রশাসনের অনুমোদন মেলেনি। জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলমান কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শিগগির এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এরইমধ্যে চারটি হাট বসানোর ব্যাপারে প্রশাসন নীতিগতভাবে একমত। বাকি হাট বসানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

চট্টগ্রামে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছুঁই ছুঁই। মৃতের সংখ্যাও ২১৭ জন। এ অবস্থায় সরকার চট্টগ্রামসহ চার জেলা শহরে পশুর হাট না বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে এমন খবরে লোকজনের মধ্যে স্বস্তি মেলে। করোনায় আতঙ্কিত লোকজনের একটিই প্রত্যাশা হাটে পশু বেচাকেনার মাধ্যমে রোগটি যেন ছড়িয়ে না যায়। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এবার আগের মতো সব পশুর হাটই বসছে। এরইমধ্যে বেশিরভাগ পশুর হাটের ইজারাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে বাকি পশুর হাটগুলোর ইজারা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

চসিকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে চসিকের নির্দেশনার মধ্যে আছে সংক্রমণ রোধে দুটি পশুর মাঝখানে তিন ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করা। একসঙ্গে তিনজনের বেশি লোক প্রবেশ করতে পারবে না। এ ধরনের অন্তত ১৩টি নির্দেশনা আছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে হাট ব্যবস্থাপনায় একটি মডিউল তৈরি করা হয়েছে। এতে সহযোগিতা করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের তিন শিক্ষার্থী। তবে এতে ঝুঁকি বাস্তবে আদৌ কতটুকু কমবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন এসব নির্দেশনা মানলে ভালো ফল মিলবে। পশুর হাট নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কোনো ধরনের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা থাকবে না।

চসিক সূত্র জানায়, প্রতিবারের মতো এবারও অস্থায়ী-স্থায়ী সব ধরনের পশুর হাট বসবে। আগের মতো ক্রেতা-বিক্রেতা নিয়ে হাটগুলো যাতে জমে ওঠে সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। নগরীতে এবার তিনটি স্থায়ী হাট বসবে। চারটি বসবে অস্থায়ী পশুর হাট। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে হাটে বিকিকিনি শুরু হবে। এগুলো হচ্ছে সাগরিকা, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। অস্থায়ী চারটি বাজারের মধ্যে তিনটি বাজারে গত ৮ জুলাই দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইজারাদার চূড়ান্ত করা হয়। এগুলো হচ্ছে- কমল মহাজন হাট পশু বাজার, সল্টগোলা গরুর বাজার ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ ও কর্ণফুলী পশুর হাট। তবে এসব হাট নিয়ে আপত্তি আছে সিএমপির। চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ইজারাদারদের জন্য ১৩টি করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। চূড়ান্ত চুক্তির সময় তা বাস্তবায়নে ইজারাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। করণীয়গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পশুর দূরত্ব নিশ্চিত, ঠিকাদারদের পক্ষে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা, বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার, সকাল থেকে বাজার বসানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা।

এসএএস/

এই বিভাগের আরও খবর