চট্টগ্রামে ওয়াসার এটিএম বুথে আগ্রহ হারাছে সাধারণ মানুষ
দাম বাড়াতে কর্মকতাদের তোড়জোড়
স্বল্প খরচে সুপেয় পানি সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম শহরে প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া ‘ওয়াটার এটিএম’ পরিষেবা।কাড চেপে সহজে বের হয় পানি। আর এ কারণেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ওয়াসার পানির বুথ। তবে বারবার পানির দাম বাড়ানোর কারণে বুথ থেকে পানি কেনা কমিয়ে দিয়েছেন গ্রাহকরা।
চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথরিটি (ওয়াসা) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি খুলশী এলাকায় প্রথম ওয়াটার এটিএম বুথ চালু করার পর দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটি নগরীর মাত্র ৬টি এলাকায় এই সেবা চালু করতে পেরেছে।২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটি শুরুর সময় চট্টগ্রাম ওয়াসা ১০০টি ওয়াটার এটিএম বুথ স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এর জন্য প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ড্রিংকওয়েলের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছিলেন ।
২০২৩ সালের ১ আগস্ট থেকে ওয়াসার এটিএম বুথের পানির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। আগে প্রতি লিটার পানির দাম ছিলো ৪০ পয়সা। আর এখন গ্রাহকের খরচ হচ্ছে ৮০ পয়সা করে। প্রতি লিটার পানির দর ৭০ পয়সা ধার্য হলেও সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১০ পয়সা ভ্যাট।
নগরবাসীকে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহে যৌথভাবে এটিএম বুথ চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ড্রিংকওয়েল এবং ওয়াসা। এতে পানি ফুটানোর ঝামেলা থেকে নেই।
বুথের পানি ক্রেতারা বলেন, ‘স্বাস্থ্যের চিন্তা করলে বুথ থেকে কিনতেই হয়। কিন্তু দিনে দিনে যেভাবে পানির দাম বাড়ছে তাতে কষ্ট বাড়ছে। পানির জন্য দ্বিগুণ খরচ করতে হচ্ছে।’
হিসাব বলছে, গত ১৪ বছরে ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে ১৫ বার। অন্যদিকে বিগত ৩ বছরে ওয়াসার গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ। তবে গত বছর পানির দাম বাড়ানোর পর এটিএম বুথ থেকে উল্লেখযোগ্য হারে পানি নেয়ার হার কমেছে।
গ্রাহকের জন্য সরবরাহ করা ৪৩ মিলিয়ন লিটার পানির মধ্যে দাম বাড়ার পর ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে হঠাৎ করে বুথের পানির চাহিদা কমে যায় ১২ শতাংশ। পরের মাসে এটি ১ শতাংশে নামলেও নভেম্বর মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশে। আর ডিসেম্বরে পানির চাহিদা কমে যায় ১২ শতাংশ। শীতে পানির চাহিদা কমার পাশাপাশি পানির দাম বাড়াও গ্রাহকের পানি কেনা কমানোর একটি বড় কারণ বলে মনে করেন বুথের অপারেটরা।
অপারেটররা বলেন, আগে ১৪ থেকে ১৫ হাজার লিটার পানি বিক্রি হতো, এখন ১০ হাজার লিটার বিক্রি হয়। দাম বাড়ার কারণে গ্রাহকের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘যে দামে এটিএম বুথের মাধ্যমে গ্রাহককে পানি দেয়া হয় তাতে প্রতিষ্ঠানের খরচ ওঠে না। তাই পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ড্রিংকওয়েলের কথা বিবেচনায় নিয়ে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।’