তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পৃথিবীতে বহু নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হয়েছে, অনেকে শাস্তি ভোগ করেছেন, কারাগারেও ছিলেন। এ ধরণের অনেক ঘটনা আছে, যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ কে কত টাকা পাবেন, এনিয়েও নোবেল লরিয়েট একে অপরের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন সুযোগ নাই। বাংলাদেশে আদালত স্বাধীন, স্বধীনভাবেই কাজ করেছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে আদালত দণ্ডিত করেছে। এরপর আপিল করার শর্তে তাকে আবার জামিনে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে দেশে-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা আছে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়, মামলাও করেনি, মামলা করেছে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীরা। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে লাভের ৫ শতাংশ তার কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে, এ যাবৎ কখনও তা দেয়া হয়নি। এটি না দেওয়ায় শ্রম আইনের ৪,৭, ৮, ১১৭ এবং ২৩৪ এর অধীনে মামলা দায়ের করেছে শ্রমিক-কর্মচারীরা। গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষ থেকে দুইজন শ্রমিক নেতাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং দুইজন শ্রমিক নেতাকে তিন কোটি করে ছয় কোটি টাকা ঘুষ দেয়া হয়েছিল। দু’জনকে ঘুষ দেয়ার পরও টাকা না পাওয়ায় সাধারণ শ্রমিকরা মামলা করেছেন। সুতরাং এখানে স্পষ্টত একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং এই অপরাধ সংঘটিত হবার কারণেই মামলা হয়েছে, শাস্তিও হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এক দশকের বেশি সময় ধরে নিয়ম ভঙ্গ, কর ফাঁকি, তার কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন অনুমোদিত সংস্থা থেকে তিন হাজার কোটি টাকা অপব্যবহার করার অভিযোগ আছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যদিও বা নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে বহু প্রশ্ন আছে। গাজায় কবরে শান্তি স্থাপন করার জন্য কখন যে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে দেয়, সেটিও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। প্রেসিডেন্ট হবার পরপর বারাক ওবামাকে যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার দিল, তিনি অবাক হয়ে গেলেন, বললেন, আমাকে কেন দেয়া হলো। মালালাকে ১৪ বছর বয়সে শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছে। কোন সময় যে ১০ বছরের কাউকে দিয়ে দেন, সেটি নিয়েও অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যাই হোক তিনি একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক, আমি তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি।
তিনি বলেন, ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশের রাজনীতি-নির্বাচন নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি ড. কামাল হোসেনের মেয়ের জামাই এবং তিনি একজন ইহুদী, যে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছে। ডেভিড বার্গম্যানকে একটু জিজ্ঞেস করেন, এ নিয়ে তার কি বক্তব্য। একটি নিবন্ধ যদি সে লিখত, তাহলে আমরা তার অবস্থানটা জানতে পারতাম।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি এককভাবে কারো নাম বলছি না, আমাদের দেশে কিছু লোক আছে, তারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না, তারা বিদেশিদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা মিশনে মিশনে পার্টিতে যায়, আবার বিভিন্ন দেশের সংস্থা থেকে অর্থ পায় এবং ট্যুরে যায়, তারা তাদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা যেটি বলে সেটিই করে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমরা তাদের বক্তব্যগুলো ভালো করে প্রচার করি। এটা না দিলে কিন্তু তাদের বাজার মূল্যটা কমে যেত। আমরাই বাজার মূল্যটা বাড়িয়ে দিই।
মুন/চখ