chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

“কর্ণফুলীতে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে ঐতিহাসিক নিদর্শন পাওয়ার আভাস “

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নে দেয়াঙ পাহাড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধান কাজ আজ শুক্রবার সকালে পরিদর্শন করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব খলিল আহমদ।

খলিল আহমদ বলেছেন, ‘সারাদেশে নানাধরণের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হচ্ছে, এসব উন্নয়ন মানুষের উপকারের জন্য। কর্ণফুলীতে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে ঐতিহাসিক কিছু নিদর্শনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কিছুকিছু স্থাপনা ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। দক্ষ খনন দল তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। এই এলাকায় যদি ঐতিহাসিক কোনো নির্দশন পাওয়া যায়, তবে এই এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করবে না। যা কিছু হবে মানুষের উন্নয়নের জন্য হবে।

সচিব খলিল আহমদ বড়উঠান জমিদার বাড়ির ধ্বংসবশেষ, মরিয়ম আশ্রম উপাসনালয় এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের গণকবর পরিদর্শনে যান।

এসময় কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, কর্ণফুলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুনুর রশিদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পিযুষ কুমার চৌধুরী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দুলাল মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগ ড. রতন কুমার, রাজশাহী বিদ্যালয়ের বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারজানা রহমান, চট্টগ্রাম জাতিতাত্বিক জাদুঘর ও চট্টগ্রাম সিলেট বিভাগের অধিদপ্তর আঞ্চলিক পরিচালকের কর্মকর্তারাসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ৬০জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৬ মে থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক পরিচালক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খনন ও বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গবেষণা করা হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে চট্টগ্রাম জেলায় প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ এটি। খনন শুরুতেই বড়উঠান ইউনিয়নে দেয়াং পাহাড়ে খননকাজ পরিদর্শনে জাপানি নৃত্যত্তিক হেনরি হিরোসে, হিরোকো হিরোসে, ঢাকা স্থাপত্য ও প্রত্নতত্ত্ব শাখার প্রফেসর ড. সুরাইয়া আক্তার এবং ইউনেস্কো ঢাকা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভাইজ।

কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, মহাস্থানগড় থেকে ১০ জন অভিজ্ঞ শ্রমিক কাজ করছেন এখানে। কাজ শুরু হওয়ার পর চওড়া দেওয়াল ও ভবনের মেঝের অস্তিত্ব পেয়েছেন। এগুলো প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের বলেও জানান শ্রমিকরা।

ইতিহাসে রয়েছে, কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের দেয়াঙ পাহাড় বিশ্বমুড়া নামক স্থানে রাজা রাজ বিক্রমের বাড়ি ছিল। গবেষণায় উঠে এসেছে, পাশ্ববর্তী উপজেলা আনোয়ারার ঝিওরি, হাজীগাঁও বটতলীসহ কর্ণফুলীর বড়উঠান এবং জুলধা এলাকা জুড়ে সপ্তম-অষ্টম শতকে পন্ডিত বিহার নামে একটি জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র গড়ে ওঠে। ষোড়শ শতকের দিকে সেটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন ও অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়।

চখ/পরী

এই বিভাগের আরও খবর