chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ছয় দশকের ঘরে ব্যান্ড মহাতারকা জেমস

দশকের পর দশক ধরে তারুণ্যকে সংগীতের সুরে উন্মাতাল করে রেখেছেন দেশের খ্যাতিমান ব্যান্ড তারকা মাহফুজ আনাম জেমস। তিনি ‘জেমস’ বা ‘গুরু’ নামে তার ভক্ত-অনুরাগীদের কাছে পরিচিত। অন্যদিকে তার ব্যান্ডদল ‘নগর বাউল’র কারণে অনেকেই তাকে ‘নগর বাউল’ বলেও সম্বোধন করেন। বাংলাদেশের ব্যান্ডকে আন্তর্জাতিক মান দিতে এই তারকার রয়েছে অসামান্য অবদান।

জেমস ব্যান্ডের বাইরেও গেয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্র ‘ঢালিউডে’। সেখানেও তিনি আকাশ সমান জনপ্রিয়তা ও সফলতা লাভ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র দুনিয়া বালিউডের সিনেমায়ও তিনি প্লেব্যাক করে রচনা করেছেন অনন্য ইতিহাস। ব্যান্ড সংগীতে এমন সব অবদানের জন্য মাহফুজ আনাম জেমস এখন যেন বাংলাদেশের ব্যান্ড ‘মহাতারকা’য় রূপ নিয়েছেন।

আমাদের বিভিন্ন উৎসব পার্বণে সংগীতের আয়োজন মানেই জেমসের গানের উপস্থিতি। আমাদের প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু করে যে কোনো আয়োজন জেমসের কনসার্ট থাকেই। তার কনাসার্ট মানেই দর্শক-শ্রোতাদের উপচেপড়া ভিড়। এ ভিড় সামাল দেওয়া অনেক সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনির কাছেও অসম্ভব হয়ে পড়ে।

আজ (২ অক্টোবর) নগর বাউল জেমসের শুভ জন্মদিন। তিনি ৬০ বছরে পদার্পণ করেছেন। এই ব্যান্ড মহাতারকা ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

কলেজের ছাত্রাবস্থায় গানের মোহে আচ্ছন্ন হন জেমস। তার পরিবারের কেউ গানের সঙ্গে যুক্ত নয়। ফলে ক্যারিয়ার হিসেবে গানকে বেছে নিতে তাকে লড়াই করতে হয়েছে। শুধু তা-ই নয় জেমসকে ঘর ছেড়ে পথেও নামতে হয়েছে। এমন বর্ণানাতীত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি হয়েছেন ভক্তদের প্রিয় ‘নগর বাউল’।

তাই তো জেমসের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়েছে, ‘পথের বাপই বাপরে মনা/ পথের মা-ই মা/ পথের বুকেই খুঁজে পাবি/ আপন ঠিকানা’এর মতো হৃদয়কাড়া গান। সত্যিই গানে গানে পথের মাঝেই আপন ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন জেমস।

জেমস সংগীত অঙ্গনে আসেন ১৯৮০ সালের দিকে। এ বছর ‘ফিলিংস’ ব্যান্ড গঠন করেন তিনি। ঠিক এর ৭ বছর পর প্রকাশিত হয় এ ব্যান্ড দলের প্রথম অ্যালবাম ‘স্টেশন রোড’। এর প্রতিটি গান দারুণ সাড়া শ্রোতাদের মাঝে। এর পরের বছর আসে ‘অনন্যা’ শিরোনামে একটি একক অ্যালবাম। এটিই জেমসকে সংগীত ভুবনের ঠিকানা তৈরি করে দেয়। তিনি প্রতিষ্ঠা লাভ করেন একজন শক্তিমান ব্যান্ড সংগীতশিল্পী হিসেবে। এভাবেই জেমস সময়ের হাত ধরে গঠন করেন ব্যান্ডদল ‘নগর বাউল’।

জেমস ২০০৫ সালে বলিউডে প্লেব্যাকের ডাক পান তিনি। সেখানে তিনি ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমায় কণ্ঠ দেন। তার মাদকতা ছড়ানো কণ্ঠে শ্রোতাপ্রিয়তা পায় ‘ভিগি ভিগি’ শিরোনামের একটি গান। এরপর ‘ও লামহে’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’ ও ‘ওয়ার্নিং’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেন জেমস।

জেমস শ্রোতাদের ‘ফিলিংস’ ব্যান্ড থেকে উপহার দিয়েছেন ‘জেল থেকে বলছি’, ‘নগর বাউল’, ‘লেইস ফিতা লেইস’, ‘কালেকশন অব ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো। পরে ‘ফিলিংস’ ভেঙে নতুন ব্যান্ড ‘নগর বাউল’ তৈরি করেন জেমস।

‘নগর বাউল’ থেকে ‘দুষ্টু ছেলের দল’ ও ‘বিজলি’ অ্যালবাম দুটি উপহার দিয়েছেন জেমস। এছাড়াও জেমসের একক অ্যালবাম হিসেবে রয়েছে ‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘কাল যমুনা’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’ও ‘তুফান’।

‘নগর বাউল’ খ্যাত জেমসের তুমুল জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ‘গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া’, ‘বাবা কত দিন দেখি না তোমায়’, ‘মা’, ‘কাল যমুনা’, ‘কুসুম কুসুম প্রেম’, ‘মীরাবাঈ’, ‘আসবার কালে আসলাম একা’, ‘তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম, ‘আমার সোনার বাংলা’, ‘এক নদী যমুনা’‘দুঃখিনী দুঃখ করো না’, ‘কবিতা’, ‘পাগলা হাওয়ার তরে’ প্রভৃতি। জন্মদিনে দেশের এই ব্যান্ড মহাতারকার প্রতি রইলো অফুরান শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

 

 

 

তাসু/চখ

 

 

এই বিভাগের আরও খবর