chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

জেলেদের জালে ইলিশের ঝাঁক

সাধারণত বছরের নির্দিষ্ট সময় বিশেষ করে বর্ষাকালে দেশের নদী ও বঙ্গোপসাগরে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়।  তাই বর্ষাকালকে  ইলিশের মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। শীতের মৌসুমে ইলিশ তেমন একটা পাওয়া যায় না।  তবে কয়েক বছর যাবৎ শীতের মৌসুমেও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে চট্টগ্রামের জেলেদের জালে। এই জেলেদের মুখে এখন আনন্দের হাসি।

সরেজমিনে নগরীর ফিশারিঘাট মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বোট(মাছ ধরার নৌকা) থেকে তুলে স্তুপ করে সাজিয়ে রাখা আছে। সেখান থেকে প্রক্রিয়াজাত করে এসব মাছ নিয়ে যাওয়া হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ইলিশের মৌসুম না হয়েও মাছ পাওয়ায় জেলেরা খুব খুশি।  জেলে আব্দুল্লাহ বলেন, শীত  মৌসুমে ইলিশ খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে গত কয়েক বছর ধরে শীত মৌসুমেও ইলিশ  পাওয়া যাচ্ছে। মোটামুটি দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

এ ব্যপারে মহানগর মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, মৌসুম না হলেও এসব মাছ তেমন বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে না। ১ কেজি একটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। তাই সকল শ্রেণির মানুষ কিনে খেতে পারছে।

তিনি জানান, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের সুফল পাচ্ছে জেলেরা। তাই এই মৌসুমেও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।

জেলা মৎস অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে শীত মৌসুমেও প্রচুর পরিমানে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। চট্টগ্রামে ২০১৩-১৪ মৌসুমে ১ হাজার ৯০৫ মেট্রিক টন, ২০১৪-১৫ মৌসুমে ১ হাজার ৭০২.৮ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ মৌসুমে ১ হাজার ৩৬৫.৪৮৫ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ মৌসুমে ৬ হাজার ৪০৪.৮৯ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৬ হাজার ৭৪১.৯৯ মেট্রিক ,২০১৮-১৯ মৌসুমে নতুন করে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার পরও ৫ হাজার ৪১৩.০ মেট্রিক টন ইলিশ ধরা পড়েছে।

প্রতি বছর অক্টোবরে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ মাস থেকে দুই মাস ইলিশের পাঁচটি অভয়াশ্রমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, ২০১৯ সাল থেকে ২০ মে থেকে টানা ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পযন্ত আট মাস জাটকা (৯ ইঞ্চির কম সাইজের ইলিশ) নিধন বন্ধের উদ্যোগ অধিক কার্যকর হওয়ায় হওয়ায় শীত মৌসুমে অভ্যন্তরীণ নদী ও সাগরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা যায়।

এ ব্যপারে  জেলা মৎস কর্মকর্তা ফারাহানা লাভলী বলেন, ইলিশ সারা বছর ডিম ছাড়লেও ৮০ ভাগ ইলিশ ডিম ছাড়ে আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমায়। ওই সময় (অক্টোবর মাস) ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় মা-ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ে। এ ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছে জেলেরা। যখন মা  ইলিশ ও ঝাটকা ধরা নিষিদ্ধ করা হয় তখন সরকারের সমালোচনা করা হয়। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার দ্বারা উপকৃত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বছরের বিভিন্ন সময় জেলে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন সচেতনতামুলক পোগ্রাম পরিচালনা করি । আমাদের সচেতনতা প্রোগ্রাম কার্যকর হয়েছে বিধায় অসময়েও প্রচুর পরিমানে ইলিশ ধরা পড়ছে।