ফিল্মি কায়দায় ১০ লাখ টাকা ছিনতাই, আটক ৪
নগরের রিয়াজউদ্দীন বাজারে দিনদুপুরে ফিল্মি কায়দায় কর্মচারীদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীর ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনতাই করেছে ডাকাত চক্র। এ ঘটনায় চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দামপাড়ায় সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন— মো. একরামুল আলম (৩৭), সাহেব হাসান মনা (২৪), মো. ইরফান ওরফে সাব্বির (২৪) ও রবিউল হোসেন ওরফে ইবু (২৩)। এদের মধ্যে একরামুলের বাড়ি পটিয়ার দেউরডেঙ্গায়, সাহেদের বাড়ি মিরসরাই, ইয়াছিনের বাড়ি সাতকানিয়া এবং রবিউলের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে।
এর আগে, রবিবার (৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রিয়াজ উদ্দিন বাজার রয়েল টাওয়ারের সামনে থেকে ব্যবসায়ী নুর মো. ইয়াছিন কবিরের দুই কর্মচারীকে মারধর করে নগদ ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতদল। পরে রাতেই ওই ব্যবসায়ী বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসামিরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র। তারা বড় বড় ব্যবসায়ীদেরকে টার্গেট করে এবং তাদের ব্যাংকিং লেনদেনের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়। পরে ওঁৎ পেতে রাখা স্থানে পৌঁছামাত্রই মারামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাতে কোন পথচারী বাঁচানোর চেষ্টা না করে। মারামারির একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, বাদী নুর এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানটি মোবাইলের ব্যবসা করেন। তার প্রতিষ্ঠানের এসআর মোরশেদ আলম (২২) ও সহকারী ম্যানেজার ত্রিদিব বড়ুয়া (৫৫) প্রায় সময় প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং লেনদেনের সকল কার্যক্রম করে থাকে। এরা জুবিলী রোডস্থ রয়েল টাওয়ারের সামনে রাস্তার উপর পৌঁছামাত্রই অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন আসামি তাদের দুইজনকে ধাক্কা দেয়। সহকারী ম্যানেজার ত্রিদিব বড়ুয়া ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আসামিরা তাদের এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ও ছুরিকাঘাত করে। এসময় তাদের কাছ থাকা ব্যাগভর্তি ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।
এর পরে ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ছিনতাই কাজে জড়িত আসামি সাহেদ হোসেন মনাকে শনাক্ত করে সোমবার (১০ জুলাই) দুপুর বায়েজিদ বোস্তামীর রউফাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তার কাছ থেকে ছিনতাইয়ের ভাগে পাওয়া নগদ ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
পররবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামি মো. একরামুল আলমকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সদরঘাটের মাদারবাড়ি রাবেয়া ওয়ার্কশপের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হোটেল প্যারামাউন্টের কক্ষ থেকে নগদ ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই দুইজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্যা সৈন্যেরটেক এলাকা থেকে আসামি মো. ইয়াছিন ও মো. ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারাও ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা সকলেই গ্রেপ্তার আসামি মো. একরামুল আলমের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতায় ডাকাতির পরিকল্পনা করে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে মো. একরামুল আলমের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় ২টি চাঁদাবাজির মামলা আছে। এছাড়াও আসামি সাহেদ হোসেন মনার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় চাদাবাজির ২টি, অস্ত্র মামলা ২টি ও ৩টি জখম সংক্রান্ত মামলা আছে। অপর আরেক আসামি মো. ইয়াছিনের বিরুদ্ধেও কোতোয়ালী থানায় দ্রুত বিচার আইনে ১টি ছিনতাইয়ের মামলা আছে।
চখ/এআর