chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

হিমোফিলিয়া রোগীদের সহজে চিকিৎসা দিতে চান না ডাক্তাররা!

হিমোফিলিয়া একটি বংশানুক্রমিক রক্ত ক্ষরণজনিত রোগ। হিমোফিলিয়া হলে রোগীর অনেক বেশি রক্তপাত হয়। কোথাও গা হলে সহজে রক্ত পাত বন্ধ হয় না। কোনো রোগী অ্যাক্সিডেন্ট করলে হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসক সেবা দিতে ভয় পান। কারণ ওই রোগীর অস্ত্র পাচার করলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে না বলে জানালেন হিমোফিলিয়া রোগী এইচএম তানভীর।

এইচএম তানভীর `হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ চট্টগ্রাম আঞ্চলিকের সাধারণ সম্পাদক। তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, আমি ৩৭ বছর ধরে এই রোগে আক্রান্ত। চট্টগ্রামে প্রায় ৭০০ জনের  অধিক  এ রোগে আক্রান্ত । চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক) হাসপাতালে হেমাটোলজিতে বিভাগে হিমোফিলিয়া ট্রিটমেন্ট সেন্টার রয়েছে। ওর্য়াল্ড ফেডারেশন থেকে কিছু ট্রিটমেন্ট পায়। কিন্ত রোগী তুলনায় চিকিৎসা সেবা অপ্রতুল। চিকিৎসা সেবা খুবই ব্যয়বহুল। এক একটা ইনজেকশনের দাম প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাগে। এক ইনজেকশন দিলে হয় না। যতবার রোগ হয় ততবার ইনজেকশন দিতে হয়।’

চিকিৎসা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, এটি বংশগত এবং জন্মগত রোগ। আমিও ৩৭ বছরে ধরে এ রোগে আক্রান্ত।  চট্টগ্রামে আমরা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে অনেক পিছিয়ে। শুধুমাত্র চমেক হাসপাতালের হেমাটোলজি  বিভাগের কিছুতা চিকিৎসা মেলে।  কিন্ত আমাদের চট্টগ্রামে প্রায় সব উপজেলায় হিমোফিলিয়া রোগীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তারা সেখানে চিকিৎসা পান না। শহরে এসে চিকিৎসা নিতে হয়।

তিনি আরও বলেন,‘ আমাদের হিমোফিলিয়া রোগীরা হঠাৎ অ্যাক্সিডেন্ট করলে হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসক সেবা দিতে ভয় পান। কারণ ওই রোগীর অস্ত্র পাচার করলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে না। রোগীরা কাটা ছেড়া চিকিৎসা পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। এই রোগের ভালো মতো কোনো চিকিৎসাও নেই। জন্মগত হয়ে আসচে। একবার হলে আর কোনো দিন রোগ সারে না।

মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী চট্টলার খবরকে বলেন, ‘এটি রক্তের রোগ এবং বংশগত। একবার কারো হলে সহজে যায় না। তবে কয়েকটি পরীক্ষা করে বুঝা যায় ওই রোগী হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত কি-না। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। পূর্ণাঙ্গ রোগ নির্ণয় করতে হলে রোগীদের ঢাকামুখী হতে হয়। এ জন্য বিভাগের এ হাসপাতালে যদি পূর্ণাঙ্গ রোগ নির্ণয়ের কেন্দ্র করা যায়, তাহলে এ অঞ্চলের রোগীদের সেবা গ্রহণ আরও সহজ হয়ে ওঠবে।‘

এ দিকে আজ ১৭ এপ্রিল। বিশ্ব হিমোফিলিয়া। ‘বিশ্বমানের সেবায় হোক সার্বজনীন রক্তক্ষরণ প্রতিরোধ’ শিরোনামে চট্টগ্রামে দিবসটি পালিত হলো আজ। দিবসটি উপলক্ষে চমেক হাসপাতালে একটি র্যালী আয়োজন করা হয়েছে। এখানে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শামীম আহসান, চমেকে অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার , হেমাটলোজি বিভাগের প্রধান সহোযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী  এবং হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ’র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নচ/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর