chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

করোনায় চট্টগ্রাম বন্দরের ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬১ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক: নভেল করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে কর্মরত পাঁচজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও করোনা সংক্রমিত হয়েছেন আরও ৬১ জন ব্যক্তি।

বুধবার (৩ জুন) পর্যন্ত ১১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করার পর তাদের পজেটিভ আসে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক। জানা গেছে, করোনার থাবায় আতঙ্কিত বন্দরের বেশিরভাগ কর্মচারী ও কর্মকর্তা। এসব কারণে বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা নিয়ে বন্দরে চ্যালেঞ্জ বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন শাখা সূত্রে জানা যায়, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল দেশের অধিকাংশ বাণিজ্যিক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট, পরিবহন সংকট, ব্যাংক সুবিধা কমসহ নানা সমস্যার কারণে ৯০ শতাংশের বেশি আমদানিবাহী কনটেইনার ডেলিভারি নিতে পারেননি আমদানিকারকরা, যার প্রভাব পড়েছিল বন্দর পরিচালন কার্যক্রমে।

বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটিতে অপেক্ষমান জাহাজ ছিল ১৩টি এর মধ্যে তিনটি স্ক্র্যাপবাহী, একটি স্টিল কয়েলবাহী জাহাজ এবং ৯টি কনটেইনারবাহী জাহাজ। মঙ্গলবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানী হয়েছিল ৩ হাজার ৯৯২ টিইইউএস (২০ ফুট কনটেইনার)। রপ্তানী হয়েছিল ৩ হাজার ৮৮১ টিইইউএস এবং ডেলিভারী হয়েছিল ৩ হাজার ৮০৩ টিইইউএস বা একক কনটেইনার।

বন্দরের প্রশাসন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৮ মে) থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের শুরু হয়েছিল করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা। বুধবার (৩ জুন) পর্যন্ত মোট ১১৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়। এর মধ্যে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন অর্থাৎ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ৬১ জন। মারা গেছেন পাঁচজন। ২৫০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
কর্মরত শ্রমিক-কর্মকর্তারা বলেন, দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে গিয়ে আমাদের ৬১ জনের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৫ জন। এতে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরের কর্মরত সাধারণ শ্রমিক-কর্রচারী ও কর্মকর্তাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আরও আগে থেকে যদি পরীক্ষা করা হতো তাহলে এত আতঙ্ক দেখা দিত না। কারণ আমাদের বন্দরের শ্রমিক বেশি। ফলে সংক্রমণ যদি বাড়ে আগামীতে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে ব্যাহত করতে পারে।
চট্টগ্রাম ব্যবহারকারী ফোরাম ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, এখন বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ সংক্রমণের আক্রান্ত। বিশ্ব এখন কঠিন সময় পার করছে, যার ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। এখন আমাদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সমন্বয় করে চলতে হবে। সবার আগে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। যদিও সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়েছে। আর বন্দরের কর্মরতদের মধ্যে কভিড আক্রান্ত সংখ্যা বাড়ছে, যা অর্থনীতির জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাদের আরও সচেতন হতে হবে। এটা একটা পেনডিমেক পরিস্থিতি চলছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম বলেন, চট্টগ্রামের বন্দরের কর্মরত অনেকে আক্রান্ত হলেও মারা গেলেও এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ না। কারণ আমাদের তিন শিফটে শ্রমিকরা কাজ করেন। ফলে শ্রমিক আছেন। আমাদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো আমদানিকারকের উপস্থিতি। তাদের উপস্থিতি বাড়লে বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে গতিশীলতা বাড়বে। এতে বন্দরের সক্ষমতার ব্যবহার বাড়বে। আর তাদের উপস্থিতি কম হলে পরিচালন কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেবে।

এসএএস/

এই বিভাগের আরও খবর