chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ঘূর্ণিঝড়ে বড় জাহাজ নিরাপদে থাকে গভীর সমুদ্রে!

চট্টগ্রামের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আজ রাতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে সতর্কতা করেছে আবহাওয়া অফিস। ফলে সব ধরণের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে থাকা বড় জাহাজগুলো বহিরনোঙরে পাঠিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।কথা হচ্ছে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় গভীর সমুদ্রে কেন বড় জাহাজগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয়?

 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী ল্যান্ড লক এরিয়া বা প্রাকৃতিকভাবে বেষ্টিত সুরক্ষিত নৌবন্দর না থাকলে বিশ্বের সর্বত্রই ঝড়ের সময় বড় জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া। কারণ বড় জাহাজগুলো গভীর সমুদ্রে নিরাপদ।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার বলেন,বিশ্বের সকল পণ্য পরিবাহী বড় জাহাজেই দুটি ইঞ্জিন কার্যকর থাকে। দুই ইঞ্জিন চালিয়ে অনেক বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাহাজ চলতে পারে। আর ঝড়ের সময়ে জাহাজকে একটি বিশেষ কৌশলে নির্দিষ্ট গতিতে চালিয়ে ভারসাম্য ঠিক রাখেন নাবিকরা। আর এতে ঝড়ের সময়ে বন্দরের চাইতে গভীর সমুদ্রেই নিরাপদে থাকে বড় জাহাজগুলো।

 

চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ সকালের দিকে বন্দর চ্যানেলে অবস্থান নেয়া জাহাজকে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বহির্নোঙরে থাকা মাদার ভ্যাসেলগুলো (বড় জাহাজ) পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে কক্সবাজার উপকূলের গভীর সাগরে। মাঝারি আকারের জাহাজ পাঠানো হয়েছে সাগরের কুতুবদিয়া অংশে। অন্যদিকে ছোট ছোট জাহাজ, ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

 

সমুদ্র বিশেষজ্ঞরা জানান, ১৯৯১ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতুর মাঝখানের একটি অংশ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল একটি বড় জাহাজ। এটি একটি অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি জেটিতে বাঁধা বড় জাহাজগুলো প্রচণ্ড ঝড়ে রশি ছিঁড়ে একটি আরেকটির ওপর আছড়ে পড়লে, ধাক্কা দিলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে। বন্দর চ্যানেলে যদি কোনো জাহাজ ডুবে যায় তবে বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়া বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। সবচেয়ে বড় কথা মেরিটাইম ওয়ার্ল্ডে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) হচ্ছে কৃত্রিম বা প্রটেকটেড হারবার না থাকলে বড় জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে আছে ন্যাচারাল হারবার, এটি প্রকৃতির দান।

 

অনেকেই মনে করতে পারেন সেখানে জাহাজগুলো ঝড়ের কবলে পড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আসলে তা ঘটে না। মূলত জাহাজ ও বন্দরের নিরাপত্তা ও ক্ষতি কমানোর জন্য জন্যই বিভিন্ন দেশের বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজটি করে থাকেন। আর এটা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত একটি নিয়ম।