chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

হোস্টেল নয়, মেসেই খরচ বাঁচে

চট্টগ্রাম কলেজ অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী মিলি মারমা(ছন্দ নাম)। তিনি রাঙ্গামটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে চট্টগ্রাম কলেজে বর্তমানে অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন তিনি। শহরে কাউকে না চেনায় প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষের প্রায় অর্ধেক সময় হোস্টেলে ছিলেন। দুমাস আগে চকবাজারের এক মেসে উঠে স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন ‘বেঁচে গেলাম’।

 

হোস্টেল জীবনের করুন কাহিনী শোনাতে শোনাতে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, শহরে নতুন আসি, কারো সাথে তেমন পরিচিতি না থাকায় বাধ্য হয়ে হোস্টেলে উঠি। অনেক বাবা মা মনে করে হোস্টেলে থাকলে খরচের পরিমাণ কম হয়। আদৌতে কিন্ত তার উল্টো। আমার বর্তমানে ঘরভাড়া- বিদ্যুৎ বিল, ওয়াই বিল সব মিলে সাড়ে ৬ হাজারে হয়ে যায়। কিন্ত হোস্টেলে সেমি স্পেশাল রুমের সিঙ্গেল সিটের জন্য গুনতে হয় ৬৮০০টাকা। অন্যান্য খরচ মিলে আমার যেত ৮ হাজারের মতো। তাই আমার মনে হয়ে মেসে খরচটা কিছুটা কম।

 

হোস্টেল ছেড়ে মেসে ওঠা আরেক ছাত্রী আনিকা মাহমুদ। তিনি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিতে পড়াশোনা করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি,  অন্যান্য খরচবাদে তার দিতে হতো ৭৮০০ টাকা। কিন্ত হোস্টেলের খাবারের মান ভালো না হওয়ায় প্রায় সময় বাইরে থেকে খাবার কিনতে হতো। এতে তার বাসা ভাড়া, খাবার খরচ, সব বিল, অন্যান্য খরচসহ যেত ১০ হাজার টাকা। কিন্ত মেসে উঠে শিক্ষা ফি বাদে প্রতিমাসে তার খরচ হচ্ছে ৮ হাজার টাকা।

 

তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমুল্যের দাম বাড়লে হোস্টেলের ভাড়াও বাড়াতো। টাকা দিতে দেরি হলে জরিমানা নেওয়া হতো। খায় বা না খায় আমাকে সেই নির্দিষ্ট টাকাটা প্রতিমাসে পরিশোধ করতে হতো। কিন্ত মেসে থাকলে দ্রব্যমুল্য বাড়লেও সেটা না খেয়ে অর্থ বাঁচানো যায়। সেই সাথে অনেক হোস্টেলে সন্ধ্যার আগে প্রবেশের বিধিনিষেধ থাকায় টিউশনি করাতেও পারে না অনেক শিক্ষাথী। এতেই সব খরচ পরিবারকে থেকে বহন করতে হয়। চাপে পড়ে যায় পরিবারে।

 

দ্রব্যমুল্য থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফি সবখানে মোটা অংকের টাকা দিতে হচ্ছে। অনেক পরিবারকে খরচ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। কিন্ত তারপরও মেয়ে সন্তানদের হোস্টেলে রাখতে চান বাবা-মাারা। কারণ হিসেবে ফটিকছড়ির আজমল হান্নান জানান, আমার মেয়েকে চকবাজারের প্রশান্তি হোস্টেলে রেখেছে। টাকা যাক, আমার মেয়ের নিরাপত্তাটা আগে জরুরী। সেই সাথে রান্না বান্নার ঝামেলা নেই। নির্বিঘ্নে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে।

চকবাজারের পরশমনি হোস্টেলে থাকা মুনিরার বাবা মুঠোফোনে বলেন , মেয়ের নিরাপত্তার জন্য হোস্টেলে রাখা। সেখানে নিয়মে বাধা থাকে। এছাড়া রান্না বান্না না পারার কারণটাও রয়েছে।

নচ/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর