chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে বায়ু দূষণে বিপর্যস্ত পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে ঈদের ছুটিতে বায়ু দূষণ কমলেও ঈদ পরবর্তী সময়গুলোতে তার প্রকোপ বেড়ে গেছে প্রচুর। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়ুর মান যাচাই বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউ এয়ার’ এর মাধ্যমে জানা যায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বায়ু দূষণের ফলে অস্ব্যাস্থকর পরিবেশের চিত্র।ঈদের ছুটির পর বৃহস্পতিবার অফিস খুললেও মানুষের চলাচল ছিল কম।

শুক্রবার বন্ধ থাকায় আজ (১৬ জুলাই)   থেকে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা। কিন্তু আগামীকাল রোববার (৮ জুলাই) থেকে সরকারি-বেসরকারি সব অফিস আদালত খুলে যাচ্ছে। ফলে নগরীতে আগের মতো বাড়বে যানবাহন চলাচলের চাপ। এতে করে দূষণের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঈদের ছুটির আগে কয়েক দিন ধরে বায়ুমান খুব অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল। এরপর ঈদের পর নির্মল বায়ু পেয়েছে নগরবাসী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে প্রায় মানুষ ঘরমুখি হওয়ায়। ছুটির দিনগুলোতে যানবাহন চলাচলও ছিল কম। এছাড়া নির্মাণ কাজ ও কলকারখানা বন্ধ থাকায় বন্ধ ছিল বায়ু দূষণের বড় উৎসগুলো।

চট্টগ্রামে বায়ু দূষণে বিপর্যস্ত পরিবেশ

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়ুর মান যাচাই বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউ এয়ার’সূচক পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয়। নগরের বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়েছে। পরিবেশবিদরা বলছেন,বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণ এমনিতেই বেশি । তাছাড়া বায়ুপ্রবাহ বেশি থাকলে ধূলিকণা এবং গাড়ি ও কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে বাতাসের মানমাত্রা খারাপ হয়।সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নগরে ফ্লাইওভার নির্মাণসহ একাধিক উন্নয়ন কাজ এবং ওয়াসার পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি থেকেই বাড়ছে ধুলোবালি।

এদিকে আজ সরেজমিনে দেখা যায়,  লালখান বাজার  থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত ধুলোবালির জন্য সামনের গাড়িও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। এছাড়া আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোড, মেরিনার্স সড়ক, অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর সড়ক, অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক পর্যন্ত ধুলোর যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ছিল পথচারীরা। এসব সড়কের পাশে বাসা-বাড়ির বাসিন্দারাও ধুলোর জন্য ভোগান্তিতে পড়েন।

চট্টগ্রামে বায়ু দূষণে বিপর্যস্ত পরিবেশ

নগরবাসীরা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত ধুলোর কারণে পথ চলতে সমস্যা হচ্ছে। বিঘ্ন ঘটছে স্বাভাবিক চলাফেরায়। ধুলোবালি বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে দূষণের মাত্রা আরো বাড়বে। বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। দেওয়ানহাট মোড়ে সাইদুল ইসলাম নামে এক পথচারী বলেন, ধুলোর জন্য রাস্তায় বের হওয়া কঠিন হয়ে গেছে। নিয়মিত পানি ছিটালে এ সমস্যা অনেকটা কমে যেত।

২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর বায়ু দূষণ রোধ করার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। বায়ুর গুণগত মান রক্ষার্থে এতে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নির্মাণকাজের চারপাশ ঢেকে রাখা ও পানি ছিটানো, রাস্তা খোঁড়ার সময় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঢেকে রাখা, স্টিল, রি-রোলিং মিলস ও সিমেন্ট কারখানাগুলোয় বস্তুকণা নিয়ন্ত্রণমূলক যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও ধুলাবালি কমাতে বাড়ির চারপাশে সবুজায়ন করা, ইটভাটায় পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি ব্যবহার, গাড়ি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা, যানজট এড়াতে ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং দূষণ রোধে নিয়মিত মেইনটেন্যান্স করা। তবে বাস্তবে এসব নির্দেশনা খুব বেশি মানা হয় না বলে অভিযোগ আছে। ফলে দিন দিন দূষণ বাড়ছে নগরের। এছাড়াও উন্নয়ন কার্যক্রম সমাপ্ত হলে বায়ু দূষণ কমবে বলে আশা করছেন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা।

আইএইচ/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর