chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে চুরির ঘটনা জানত না গণপূর্ত বিভাগ!

বিভাগীয় ডেস্ক : কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করে গণপূর্ত বিভাগ।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকে স্থাপিত ২৫০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন উপকেন্দ্রটি নির্মাণ শেষ করে গত দুই বছর আগে গণপূর্ত বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

চূড়ান্ত বিলসহ জামানতের টাকাও উত্তোলণ করে নেয় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান শামীম এন্টারপ্রাইজ। সদ্য নির্মিত এই উপকেন্দ্রটি বৈদ্যুতিক সংযোগসহ সচলকরণের অপেক্ষায় ছিল বলেও দাবি ওই ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানের।

কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ চালুর আগেই গত ২২ মার্চ উপকেন্দ্রের মূল্যবান সকল মালামাল চুরি হয়ে গেছে।

তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দাবি নাকচ করে দিয়ে গণপূর্ত বিভাগ কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, যেহেতু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনও সচল অবস্থায় আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি; সে কারণে ওখানে চুরি যাওয়া মালামালের দায়-দায়িত্বও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেই বহন করতে হবে।

গত বুধবার সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের বাম দিকে সদ্য নির্মিত দুই শাটার ও একটি জানালাবিশিষ্ট একতলা শেডের পূর্বদিকে একটি জানালা, পশ্চিম দিকে দুটি এবং পেছন বা উত্তর দিকে দুটি জানালার কাচ ভাঙা, দুটি জানালার গ্রিল ভাঙা, সামনের দুটি শাটারের লক পয়েন্টে দুটি করে তালা ভাঙার চিত্র।

এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা মাকড়সার জালে আচ্ছাদিত কক্ষের মধ্যে তিনটি দণ্ডায়মান বাক্স এবং একটি ট্রান্সফরমারের বাক্স দেখা যায়। তবে সেগুলোর মধ্যে কোনো যন্ত্রপাতি বা বা মালামাল নেই। খালি বাক্স পড়ে আছে।

খোদ জেলা প্রশাসনের প্রধান ফটকসংলগ্ন জায়গায় স্থাপিত বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে এমন দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় জেলার উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সদস্যবৃন্দও হতবাক।

সেখানে উপস্থিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাজি গোলাম মহসিন বলেন, ‘এমন দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা জানার পরও এ বিষয়ে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম উন্নয়ন সমন্বয় মিটিংয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এটা চরম দুঃখজনক।

সরকার একদিকে উন্নয়ন খাতে বিপুলপরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে অন্যদিকে একটি দুর্বৃত্তচক্র সকল অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে। এসব ঘটনার সঠিক তদন্তসহ দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া উচিত।’

কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জানান, জেলা প্রশাসন চত্বরে স্থাপিত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে যন্ত্রপাতিসহ মালামাল চুরি হয়েছে মর্মে কোনো অভিযোগ নিয়ে এখনও কেউ থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘শুনেছি জেলা প্রশাসন ভবনের বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গণপূর্ত বিভাগ দুই বছর আগেই ওই উপকেন্দ্রটি জেলা প্রশাসন চত্বরে স্থাপন করেন।

কিন্তু সেটি আজও কেন সচল করা হয়নি তা তদন্ত করে দেখা হবে। এখানে কারো কোনো গাফিলতি পাওয়া গেলে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চখ/ইসমাইল/আর এস