ঢাকা কলেজের ৫ ছাত্র দুদিনের রিমান্ডে
বিভাগীয় ডেস্ক: রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ হাসান হত্যা মামলায় গ্রেফতার ঢাকা কলেজের পাঁচ শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শান্তা আক্তার বৃহস্পতিবার শুনানি করে রিমান্ড মঞ্জুর করে তাদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন, ঢাকা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আব্দুল কাইয়ুম ও পলাশ, সমাজ বিজ্ঞানের ছাত্র ইরফান, বাংলা বিভাগের ছাত্র ফয়সাল ও ইতিহাস বিভাগের জুনায়েদ ইসলাম।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) তারিকুল আলম জুয়েল আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ৫ জনের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বুধবার (২৭ এপ্রিল) ডিবির পৃথক অভিযানে দুজন গ্রেফতার হয়। এরা হলেন ইমন ও কাইয়ুম। এদের মধ্যে ইমনকে ঢাকা কলেজ থেকে এবং কাইয়ুমকে পঞ্চগড় থেকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আমরা সংঘর্ষে ঘটে যাওয়া দুটি হত্যা মামলার তদন্ত করছিলাম।
সর্বশেষ দুজনসহ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোট পাঁচ শিক্ষার্থীকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এরপর তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, নিহত নাহিদ গত ১৯ এপ্রিল বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে জড়ান।
একটি বড় ছাতা হাতে তাকে সংঘর্ষের একদম সামনে দেখা যায় অন্তত দুই ঘণ্টা ধরে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে ইটের আঘাতে আহত হয়ে সড়কে পড়ে যান নাহিদ।
এরপর তার ওপর নির্মম হামলা চালায় হেলমেটধারী কয়েক যুবক। নাহিদকে ওই সময় দুজন পরপর কোপায়। এর মধ্যে সবচেয়ে হিংস্র দেখা গেছে শনাক্ত হওয়া রাব্বীকে।
রাব্বীর আগের হামলাকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। নাহিদ হত্যার পরদিন হাসপাতালে মারা যান দোকানকর্মী মুরসালিন। মুরসালিনকেও কুপিয়েছে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী।
মুরসালিনের হত্যাকারীকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। রাব্বীর নাম জানা গেলেও অন্যদের নাম জানা যায়নি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, সব ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে; কয়েকজনকে শনাক্তও করা হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে। দুই মামলায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চখ/আর এস