chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

পরিচয় না জেনে তুচ্ছ ঘটনায় র‌্যাব-পুলিশ ও স্থানীয়দের হাতাহাতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাদা পোশাকে থাকা র‌্যাব-পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় এক দোকানদারের সাথে কথাকাটাকাটি থেকে হাতাহাতি এবং পরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

তবে নিজেদের স্ব স্ব পরিচয় পাওয়ার পর ভূল বুঝাবুঝির অবসান ঘটে। তবে শেষ পর্যন্ত স্থানীয় এক যুবককে ধরে নিয়ে যায় র‌্যাব। আজ শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুর ১টার সময় মিরসরাই থানা মসজিদের সামনে এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরনে জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে মিরসরাই সদরস্থ থানা মসজিদের পাশে স্থানীয় দোকানদার আলমগীরের কুলিং কর্ণারে ৪ ব্যক্তি প্রবেশ করে তার দোকানের চলাচলের পথ রোধ করে টেবিল চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন।

এতে দোকানদার আলমগীর ৪ ব্যক্তিকে অনুরোধ করে কাষ্টমার যাতায়াতের পথ খোলা রেখে বসতে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অশোভন আচরন করেন এবং দোকানদার আলমগীরের নাম, পিতার নাম নথিভূক্ত করেন।

দোকানে বসে থানা অন্য আরো ১০/১২ জনের মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম মনা নামে এক যুবককে তার নাম, পিতার নাম জিজ্ঞাসা করলে সে বলতে অপারগতা প্রকাশ করে।

এসময় ওই ৪ জনের সাথে রাস্তায় দন্ডায়মান একটি হাইচ গাড়ি থেকে নেমে আরো ২ ব্যক্তি যুক্ত হয়ে তৌহিদুল ইসলাম মনাকে পর পর দুটি থাপ্পড় লগিয়ে দেন।

এতে তৌহিদুল ইসলাম মনাসহ অন্যান্যরা প্রতিবাদ করলে মনাকে ৬ ব্যক্তি মিলে মারধর করে এবং হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে হাইচ গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে।

এ সময় ঘটনাটি জুমার নামাজের জন্য মসজিদে আগত মুসল্লিদের নজরে আসে। মুসল্লিদের মধ্যে মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন, সাবেক ওসি মুজিবুর রহমান, ওসি তদন্ত ওলিউর রহমান ও উপ পুলিশ পরিদর্শক খাইরুলও ছিলেন।

তারা পাঞ্জাবি পড়া আবস্থায় মসজিদে প্রবেশের সময় ঘটনাটি দেখে সামনে এগিয়ে যান। অজ্ঞাত লোকবল দ্বারা স্থানীয় যুবক তৌহিদল ইসলাম মনাকে মারধর করে জোর পূর্বক হাইচ গাড়িতে তোলার সময় তারাও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে।

এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনা নিয়ন্ত্রনের বাইরে যাওয়ার আগেই মনাকে আটক কারীরা নিজেদের র্যাব বলে পরিচয় দেয় এবং পুলিশকে র‌্যাবের প্লেকার্ড ও পোশাক (কালো কোটি) প্রদর্শন করেন।

এতে পুলিশ ও র‌্যাবের মধ্যে ভূল বুঝাবুঝির অবসান হয়। এসময় মিরসরাই থানা মসজিদে আগত শত শত মুসল্লি, থানা পুলিশ ও মিরসরাই প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

র‌্যাব ৭ এর ফেনী ক্যাম্পের এএসপি জুনায়েদ উপস্থিত মিরসরাই থানা পুলিশ ও সাংবাদিকের জানান, একটি অভিযানের স্বাক্ষি নিতে গিয়ে একটু ভূল বুঝাবুঝি হয়েছে স্থানীয় যুবক তৌহিদুল ইসলাম মনার সাথে।

উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে মুচলেখা নিয়ে তাকে আমরা ছেড়া দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ তাকে ক্যাম্পে নিয়ে যেতে বলছেন তাই আমারা তাকে এখানে ছাড়তে পারছিনা।

র‌্যাব ৭ এর কোম্পানি কমান্ডার এই প্রতিনিধি কে জানান, তৌহিদল ইসলাম সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। তাই তাকে আমরা আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে মামলা করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এ ব্যাপারে জানার জন্য মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি মিটিং এ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে ওসি তদন্ত ওলিউর রহমান জানান, ঘটনার সময় আমি পেছনে ছিলাম। আমরা মসজিদে যাওয়ার সময় দেখি এক যুবককে কিছু লোক টেনে হিছড়ে মাইক্রোতে তোলার চেষ্টা করছে।

ওই যুবককে রক্ষা করতে ওসিসহ আমাদের পুলিশ সদস্যরা বাধা দিতে গেলে তাদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তারা গাড়ির ভেতর থেকে র‌্যাবের পোশাক দেখালে আমরা আর কোন পদক্ষেপ নিই নাই।

দোকানদার আলমগীর ও প্রত্যক্ষদর্শী একাদিক স্থানীয় ব্যাক্তি জানায়, যুবক তৌহিদুল ইসলাম মনার কোন দোষ নেই। সে শুধু তার নাম পরিচয় দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে।

তাকে এভাবে মারধর করে, অত্যাচার করে তুলে নেওয়া একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন হবে, র‌্যাবের প্রতি মানুষ আস্থা হারাবে। তাই নিরাপরাধ তৌহিদুল ইসলাম মনাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে র‌্যাবের প্রতি তারা অনুরোধ জানান।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর