chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বোয়ালখালীতে এক শিক্ষকের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ সবাই

বোয়ালখালী প্রতিনিধি:চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌরসভার বড়ুয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিজিয়া বেগম। রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ বিদ্যালয়টিকে ২০১২ সালে সরকার জাতীয়করণ করলে বিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষকদের চাকুরিও সরকারি করা হয়। সরকারি হওয়ার আগে ও পরে এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন শিক্ষিকা রিজিয়া বেগম।

নানা অনিয়মের কারণে তিনি বেশ সমালোচিত। তার কর্মকান্ডে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি, সহকর্মী ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

এ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ করে চলেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে। অভিযোগ দিলেও এর প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গত ৩ মার্চ এই শিক্ষকের অনিয়ম নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ শহীদুল আলম।

এছাড়া ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষিকা রিজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎসহ দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন বিদ্যালয়ের ভূমি দাতা দুলাল বড়ুয়া।

এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে না দেওয়াসহ অনিয়মের অভিযোগ এনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের কর্মরত তিন সহকারি শিক্ষক। এছাড়া গত ২০১৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল ভাঙা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর দোষ চাপান এবং শিক্ষার্থীদের আটা পড়া দিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন শিক্ষিকা রিজিয়া বেগম।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ শহীদুল আলম বলেন, শিক্ষিকা রিজিয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর সুবাদে অফিসের নাম করে কর্মস্থলে না থাকা, বিভিন্ন প্রকল্প ও সরকারী অনুদান আত্মসাৎ, ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা নিজের ও পারিবারিক মোবাইল নম্বর দিয়ে আত্মসাৎ, দেশের বাইরে গিয়েও হাজিরা খাতায় উপস্থিতির স্বাক্ষর করেন তিনি।

শেখ শহীদুল আলম জানান, অভিযোগ রয়েছে সহকর্মীদের অশ্লীল আচরণ, শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, ভর্তি কিংবা ছাড়পত্র দেওয়ার সময় টাকা নেন তিনি। এমন কি বিদ্যালয়ের কোড নম্বর দিতেও টাকা নেন। কি বলবো, ওই শিক্ষিকা আমার (সভাপতি) স্বাক্ষর জাল করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলণ করে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে শাস্তি না দিলেও কর্তৃপক্ষ বদলী করতে তো পারেন। ওই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষকের পদটিও শুন্য রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষক রিজিয়া বেগম বলেন, ‘অভিযোগগুলো সত্য নয়। সভাপতি নিজেই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষকরা ষড়যন্ত্র করে এসব করছেন। অনেক অভিযোগ তারা দিয়েছেন এসব শিক্ষা অফিস তদন্ত করে সত্যতা পাননি।’

তিনি ভারপ্রাপ্ত নন দাবি করে বলেন, ‘আমি সরাসরি প্রধান শিক্ষক।’

সদ্য যোগকৃত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রহমান চৌধুরী বলেন, সবেমাত্র কর্মস্থলে যোগদান করেছি। এ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। তবে অভিযোগগুলো গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর