প্রবাস ডেস্ক : ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আজারবাইজানের বাকু বিশ্ববিদ্যালয়ের ল পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের রাজশাহীর মেয়ে রিয়া ফেরদৌসী (৩৩)। পরিবার কখনো ভাবেনি জীবনের বিনিময়ে স্বপ্নটা এভাবে শেষ হবে!
তাই হয়েছে। গতকাল বুধবার আজারবাইজান সময় সকাল ১০টায় রিয়া ফেরদৌসীকে (৩৩) খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। রিয়া ফেরদৌসী রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা সদরের কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে।
রিয়া ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। মেয়ের খুনের খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের দাবি, সেখানকার পুলিশ হত্যার বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করছে।
তবে কী কারণে বা কারা হত্যা করেছে, সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি তার পরিবারের লোকজন। এদিকে আজারবাইজানে বাংলাদেশি কনস্যুলেট নেই। এ কারণে ইরানে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
নিহত রিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে আইন বিষয়ে অনার্স শেষ করে স্বপ্ন পূরণের আশায় পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর আজারবাইজানে। সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন বাকু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে।
পড়ালেখার খরচ জোগাতে খণ্ডকালীন চাকরি নিয়েছিলেন একটি রেস্টুরেন্টে। বাড়িতে দরিদ্র মা-বাবা চেয়ে ছিলেন মেয়ের অপেক্ষায়। ভেবেছিলেন ব্যারিস্টার হয়ে মেয়ে ফিরে এলে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে। তাদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
নিহত রিয়ার ভাই ফরমান আলী বলেন, সেখানকার লোকের মাধ্যমে শুনেছি, ওই রেস্টুরেন্টে যাতায়াতের সময় স্থানীয় কিছু বখাটে যুবক তাকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করত।
তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় বুধবার সকালে রিয়াকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তার হাত-পা ভাঙা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা এ মুহূর্তে আমরা বলতে পারব না।
বাবা আবু বক্কর বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। খুনিকে শনাক্ত করা বা বিচার পাওয়ার কোনো আশা নেই। তাই সরকারের কাছে আকুল আবেদন, অন্তত মেয়ের লাশটা যেন দেশে এনে আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানকার একটি মেয়ে বিদেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন—এমন কথা শুনেছি।
তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনিকভাবে লিখিত কোনো তথ্য বা ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ আমাদের কিছুই জানায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি প্রশাসনের ওপর মহলে জানানো হবে।
চখ/আর এস