chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিপিএলের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনাল: হ্যাটট্রিক কুমিল্লার

খেলাধুলা ডেস্ক : আবারো ট্রফি তুলে উল্লাসধ্বনি দিয়ে হৈচৈ আর আনন্দে মাতোয়ারা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এর ক্রিকেটাররা। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে বরিশালকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা।

শুক্রবার শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বল্প পুঁজি নিয়ে দুর্দান্ত বরিশালকে শেষ পর্যন্ত আঁটকে দিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নিয়েছে ১ রানে।

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফয়সালা করতে ফাইনালে উঠে আসা কুমিল্লা এর আগে ফাইনালে উঠেছে দুইবার। দুইবারই পেয়েছে শিরোপার স্বাদ পেয়েছে ২০১৫ আর ২০১৯ সালে।

আজ শুক্রবার তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হবার লক্ষ্যে বরিশালের বিপক্ষে খেলতে নেমে শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা।

শিরোপা নির্ধারণী হাইভোল্টেজ এ ম্যাচে ব্যাট হাতে রীতিমত তাণ্ডব চালিয়ে ফিফটি হাঁকান সুনীল নারিন। পরে মঈন আলী ও আবু হায়দার রনির ব্যাটিং দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত বরিশালকে ১৫২ রানের লক্ষ্য দিতে সক্ষম হয় কুমিল্লা।

জবাব দিতে নেমে মুস্তাফিজের দেয়া চার ওয়াইডে প্রথম ওভারে মাত্র ৪ রান তুলে শুরু করে বরিশাল। পরের ওভারে শহিদুলকে চার্জ করতে গিয়েই মিড অনে ডু প্লেসিসের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ফিজের ৬ বল খেলেও কোনো রান নিতে না পারা মুনিম শাহরিয়ার (০)। যাতে মাত্র ৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বরিশাল।

তবে সৈকত আলীর তাণ্ডবে চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে কাঙ্ক্ষিত জয়ের লক্ষ্যেই ছুটতে থাকে সাকিবের দল। ফাইনালে সুযোগ পেয়েই ব্যাট হাতে ঝড় তুলে মাত্র ২৬ বলে ফিফটি আদায় করে নেন সৈকত। যাতে পাওয়ার প্লে-তে পঞ্চাশ টপকানো বরিশালের সংগ্রহ ৭ ওভারে ১ উইকেটে ৬৫ রান।

তবে ফিফটির পর আর বেশিদূর যেতে পারেননি সৈকত আলী। আউট হন ৫৮ রান করেই। তাঁর ৩৪ বলের এই মারকুটে ইনিংসে ছিল ১১টি দর্শনীয় চারের সঙ্গে একটি ছক্কার মার। সৈকত আউট হলে খোলস ছেড়ে বের হন গেইল।

গোটা টুর্নামেন্টে গেইল ছিলেন সাদামাটা। বয়সের ভার যে নিতে পারছিলেন না এই ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব সেটা ছিল স্পষ্ট। ৩১ বলে ২ ছক্কা ও এক চারে ৩৩ রান করে এলবিডব্লু হন স্বদেশী সুনীলের বলে।

দলীয় ১০৭ রানে গেইলের বিদায়ের পর বরিশালের দরকার ছিল ৪৫ রান। ব্যাত করতে নেমে সাকিব আল হাসান ৭ বলে ৭ রান করে ক্যাচ দেন তানভির ইসলামের বলে। পয়েন্টে থাকা মোস্তাফিজ দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে চাপে ফেলেন বরিশালকে।

চাপটা আরও বেশি বেড়ে যায় দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় সোহানের রান আউট। ১৩ বলে ১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে বিপাকে ফেলেন দলকে। তাতে পেন্ডুলামের মতো সমানতালে ম্যাচ ঝুঁকে যায় দু’দলের দিকে। এক রান পর ১৩৪ রানের মাথায় ডোয়াইন ব্রাভোকে ১ রানে এলবিডব্লু করে ফেরান সুনীল নারিন।

জিততে হলে শেষ দুই ওভারে ১৬ রান লাগত বরিশালের। মোস্তাফিজের করা ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শান্ত সাজঘরে ফেরেন ১২ রানে এলবিডব্লু হয়ে। এই ওভারে মোস্তাফিজ দেন ৫ রান।

শেষ ওভারে ১০ রান লাগত বরিশালের। স্ট্রাইকে থাকা তৌহিদ হৃদয় সোজা মারলেও ঠেকিয়ে দেন বোলার শহিদুল। পরের বলে অফ সাইডে বল ঠেলে ১ রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেন হৃদয়।

তৃতীয় বলে এক রান নেন মুজিব। পরের বল বলটা ওয়াইড হলেও চতুর্থ বলে দুই রান নেন হৃদয়। পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলে দিলেও হাত ফসকে যায় তানভিরের। শেষ বলে ৩ রান আর নিতে পারেননি কুমিল্লা।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সুনিল নারিনের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভার; ১৫১/০; (নারিন ৫৭, লিটন ৪, জয় ৮, ডু প্লেসিস ৪, ইমরুল ১২, মঈন ৩৮, রনি ১৯, শহিদুল ০, তানভির ০*, মোস্তাফিজ ০*); (মুজিব ৪-০-২৭-২, শফিকুল ২-০-২৪-০, সাকিব ৪-০-৩০-১, ব্রাভো ৪-০-২৬-১, রানা ৪-০-৩৪-১)।

ফরচুন বরিশাল: ১৫০/৮; ২০ ওভার; (মুনিম ০, গেইল ৩৩, সৈকত ৫৮, সোহান ১৪, সাকিব ৭, শান্ত ১২, ব্রাভো ১, হৃদয় ৯, মুজিব ৪); (মোস্তাফিজ ৪-০-৩০-১, শহিদুল ৪-০-৩৬-১, নারিন ৪-০-১৫-২, মঈন ২-০-২১-০, রনি ১-০-১৪-০, তানভির ৪-০-২৫-২)।

ফলাফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১ রানে জয়ী।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর